অবহেলিত ভালোবাসা বাংলা গল্প

 অবহেলিত ভালোবাসা বাংলা গল্প 

অবহেলিত ভালোবাসা বাংলা গল্প

কলেজ ক্যাম্পাসে বাইকের উপর বসে সিগারেট খাচ্ছি আর বন্ধুদের সাথে
আড্ডা দিচ্ছি।।। হঠাৎ কেউ এসে বললো,,,
ভাই মেঘা তো একটা ছেলের হাত ধরে কথা বলতেছে।।।
সিগারেটটা ফেলে হাতে লাঠি নিয়ে ছেলেটার কাছে গেলাম।।। ছেলেটার
কাছে গিয়ে ওকে কিছু বলতে যাবো তখনি মেঘা বললো,,,,
মেঘা ঃ এখানেও গুন্ডামি শিরু করে দিয়েছিস।।। তুই কি আমাকে একটু
শান্তিতে থাকতে দিবি না।।। তোর জন্য আমাকে নিজের কোনো স্বাধীনতা
নাই।।।
আমি ঃ এরকম করে বলেছো কেনো?? আমি তো তোমাকে ভালোবাসি
তাইতো তোমার সাথে অন্য কাউকে সয্য করতে পারি না।।।।।
মেঘা ঃ তোকে আর কত বার বলবো আমি তোকে ভালোবাসি না।।। তারপরও
কেনো তুই বুঝতেছিস না।।। ভালোবাসা তো দূরে থাক তোর ছায়াও আমি
দেখতে চাই না।।।
আমি ঃ হ্যা জানি,, হাজার বার তুমি বলেছো আমায় ভালোবাসো না।।। আর
কত বার বলবে এই একিই কথা।।। এখন ভালোবাসি বললেই তো হয়।।।
মেঘা ঃ উফ,, ওই তোর কি কোনো লজ্জা শরম নাই।।।। তোকে এতো বলি
তাও তুই আমাকে বিরক্ত করিস।।।।
আমি ঃ ভালোবাসলে সবকিছু সয্য করা যায়।।। তুমি আমাকে ভালোবাসো
তারপর দেখবা তুমিও আমার সব পাগলামো সয্য করতে পারবা।।।।
মেঘা ঃ সাইকো তুই একটা।।।। তোর জন্য কলেজে কেও আমার সাথে
কথা বলতে আসে না।।। সবাই তো আমাকে দেখলেই দৌড়ে চলে যায়।।। কেনই
বা বলবে, সবাইকেই তো মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিস।।।।
আমি ঃ ছেলেদের সাথে কথা বলার কোনো দরকার নেই।।। যে ছেলে তোমার
সাথে কথা বলবে তার অবস্থা খারাপ করে দিবো।।। ওর কত বড় সাহস তোমার
হাত ধরে।।। আজকে তো ওকে মেরেই ফেলবো।।। যেখানে তোমার সাথে
কোনো ছেলে কথা বললে আমি সয্য করতে পারি না সেখানে ও তোমার হাত
ধরে।।।।
ছেলেটা কাঁদতে কাঁদতে বললো,,,
ছেলেটা ঃ বিশ্বাস করেন ভাইয়া আমি ইচ্ছা করে ধরিনি,,, ওর কাছ থেকে বই
নিতে গেছিলাম তখন ওর হাত লেগে যায়।।। আমাকে মাফ করে দিন ভাইয়া,,
আমি আর কখনো ওর সাথে কথা বলবো না।।।
আমি ঃ তোকে এখন কিছু না বলে ছেড়ে দিলে অন্য ছেলেরাও ওর সাথে
কথা বলতে সাহস পাবে তাই তোকে তো শাস্তি পেতেই হবে।।।
মেঘা ঃ ওকে কিছু করলে ভালো হবে না কিন্তু বলে দিলাম।।। ওকে ছেড়ে দে।।।
আমি ঃ তোমার কথা কেনো শুনবো।।। তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না।।।।
মেঘা ঃ প্লিজ ওকে ছেড়ে দে।।।।
আমি ঃ আচ্ছা যাও ছেড়ে দিলাম।।।
মেঘা ঃ একদিন ঠিকই তুই পস্তাবি।।। আমি কখনো তোকে ভালোবাসবো
না।।।
আমি ঃ কেনো বাসবে না??? তোমার তো কোনো বয়ফ্রেন্ডও নেই তাহলে
আমায় ভালোবাসবে না কেনো??? আমি আর কি করলে তুমি আমায়
ভালোবাসবে বলো।।।
মেঘা ঃ তোর কিছু করতে হবে না, আমি তোকে কখনোই ভালোবাসবো না।।।
এটা বলেই মেঘা চলে গেলো।।। ভাবতেছি মেঘা আমায় কেনো ভালোবাসে না।।।
ছোটবেলা থেকে মেঘাকে ভালোবাসি আর ও শুধু আমাকে অবহেলাই করে
এসেছে।।। পাশাপাশি বাসা হওয়াতে ছোটবেলা থেকেই মেঘার সাথে পরিচয়।।
মেঘার বাবা আর আমার বাবা ভালো বন্ধুও বটে।।। এ প্রর্যন্ত যে মেঘাকে কত
হাজার বার ভালোবাসি বলেছি তার ঠিক নেই।।। আগে তো যাও আমার সাথে
কথা বলতো এখন তো আমায় সয্যই করতে পারে না।।। মেঘা রবিকে যতই
ইগনোর করুক না কেনো রবি সবসময় মেঘার সাথে কথা বলতে আসবেই।।।
কলেজে রবিদের সাথে আর মেঘাদের সাথে সম্পর্ক একদমই ভালো না।।। রবি
আর মেঘার ডিপার্টমেন্টও আলাদা।।।। রবি একাউন্টিং এ আর মেঘা ইংরেজি।
পুরো কলেজ জানে এই দুই ডিপার্টমেন্টের শত্রুতার কথা।।। একমাত্র রবিই
ব্যাতিক্রম।।। মেঘা বিরক্তিভাব নিয়ে ওর বন্ধুদের কাছে আসলো।।। মেঘাকে
দেখে ওর বন্ধুরা বললো,,,,
বন্ধু ঃকি হয়েছে তোর????
মেঘা ঃ কি আর হবে??? ওই বদমাইশ ছেলেটা আমার জীবনটা নরক বানিয়ে
দিয়েছে।।। ওর জন্য কোথাও গিয়ে শান্তি নাই।।।
বন্ধু ঃপ্রিন্সিপালের কাছে বিচার দে।।।
মেঘা ঃ কতবার দিবো বিচার।।। ওকে তো কলেজ থেকে বের করে দিচ্ছে না।।।
বন্ধু ঃ এবার আমরা সবাই যাবো তোর সাথে।।। এভাবে আর কতদিন ওর
অত্যাচার সয্য করবি।।। আজকেই এর একটা সমাধান করতে হবে।।।
মেঘা আর ওর বন্ধুরা প্রিন্সিপালের কাছে বিচার দিতে গেলো।।। আর অন্যদিকে
রবি বসে বসে ওর বন্ধুদের কথা শুনছে।।। মনে হচ্ছে যেনো ওর কানে তুলা
দেওয়া তাই ওরা যা বলছে ও না শোনার ভান করে বসে আছে।।।
বন্ধু ঃ তোর জন্য তো কলেজে আমাদের কোনো মান সম্মানই আর বেঁচে
নেই।।।
আমি ঃ আমি আবার কি করলাম???
বন্ধু ঃ তুই জানিস মেঘাদের ডিপার্টমেন্ট এর সাথে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর
শত্রুতার কথা।।। তারপর ও কপনো মেঘার পিছনে ঘুরিস??? এমনতো না যে ও
তোকে ভালোবাসে।।।
মেঘা প্রিন্সিপালকে বললো,,,,
মেঘা ঃ স্যার আপনি কি রবিকে কিছু বলবেন।।। ও আমায় এতো বিরক্ত করে
তারপর ও আপনারা ওকে কলেজ থেকে বের করে দিচ্ছেন না।।।
প্রিন্সিপাল ঃ কেনো বের করে দিতে পারছি না তা তুমিও ভালো জানো।।।
আচ্ছা তোমার বাবা আর রবির বাবা তো বন্ধুও।।। তুমি তোমার বাবাকে এসব
জানাতে পারো।।।।
মেঘা ঃ বললে হয়তো রবির বাবাকে কিছু বলতে পারে তাহলে হয়তো তাদের
বন্ধুত্বও নষ্ট হয়ে যেতে পারে।।। সেই ভয়েই তো কিছু বলি না।।।।
প্রিন্সিপাল ঃ তোমার বাবাকে বলা উচিত।।। এভাবে আর কতদিন চলবে।।।।
মেঘা আর ওর বন্ধুরা প্রিন্সিপালের রুম থেকে চলে আসলো।।। মেঘা ভাবতেছে
কি করবে।।। মেঘা আর কোনো উপায় না পেয়ে ওর বাবাকে বলারই সিদ্ধান্ত
নিলো।।। মেঘা আর ওর বন্ধুরা সবাই একসাথে আড্ডা দিচ্ছে।।।। হঠাৎ রবি
এসে বললো,,,,
আমি ঃ প্রিন্সিপালকে বলে কোনো লাভ হলো কি????
মেঘা ঃ তুই কেনো বুঝতে পারছিস না।।। আমি তোকে ভালোবাসি না
তারপরও কেনো আমায় বিরক্ত করছিস???
আমি ঃ বিরক্ত করছি এটা কেনো বলছো।।। আমি তো তোমাকে ভালোবাসি।।
তাই তো তোমার কাছে আসি।।।। আর তুমি যে বারবার প্রিন্সিপালের কাছে
বিচার দিতে যাও কিন্তু নিরাশ হয়ে আসো এটা আমার খুবই খারাপ লাগে।।।।
রবির বন্ধু বলে উঠলো,,,,
রবির বন্ধু বলে উঠলো,,,,
বন্ধু ঃ রবি তুই কিন্তু বেশি বেশি করছিস।।। এর ফল কিন্তু ভালো হবে না।।।
রবি ঃ আমি তো ভয়েই পেয়ে গেছি।।। প্লিজ আমাকে মাফ করে দেন।।।
হা হা হা তোরা আবার কি করবি রে।।।
মেঘা ঃ মার খেতে না চাইলে এখান থেকে যা।।। আমার ধৈর্যের পরিক্ষা নিস
না।।।।
রবি ঃ হা হা হা, এরকম করে বলছো কেনো।।। তোমাকে ভালোবাসি বলেই
তো এসব করি।।।
রবি এ কথা বলার পরই মেঘার বন্ধুরা ওকে মারতে শুরু করলো।।। রবি বুঝতে
পারছে না ওরা হকিস্টিক কোথায় পেলো।।। তার মানে আগে থেকেই ওদের
পরিকল্পনা করা ছিলো।।। মেঘার বন্ধুরা রবিকে ধরে নিয়ে গেলো।।।।
একটা রুমের ভিতর নিয়ে রাখলো।।। তারপর সবাই মিলে মারতে লাগলো।।।
রবির বন্ধুরা সবাই একসাথে আড্ডা দিচ্ছে, হঠাৎ কেউ দৌড়ে এসে ওদের
বললো,,,,
ঃ রবিকে ইংরেজি ডিপার্টমেন্ট এর ছেলেরা মারতেছে।।।
ওরা দৌড়ে গেলো,, রবিকে মাঠের ভিতর পরে থাকতে দেখলো।।। রবিকে
হাসপাতালে নিয়ে গেলো।।।। অন্যদিকে মেঘার বন্ধুরা ভাবছে রবিকে উচিত
শিক্ষা দিতে পেরেছে।।।। কিন্তু মেঘা ভাবছে অন্যকিছু।।।। মেঘার বন্ধুরা ওকে
বললো,,,,
বন্ধুরা ঃ কি হলো তুই চুপ করে আছিস কেনো????
মেঘা ঃ না মানে,,, রবিকে মারাটা কি ঠিক হলো????
বন্ধুরা ঃ কি বলছিস এসব??? ও তোকে এতো বিরক্ত করছে প্রিন্সিপালকে
বিচার দিলাম তাও তো কিছু হলো না।।। ওকে এতো বার নিষেধ করেছিস
তাও কি শুনেছে ও।।। তাহলে এই কথা বলছিস কেনো????
মেঘা ঃ ও একটা জেদি ছেলে।।। কখনো কারও কথা শুনে না।।।।।। যতবারই
প্রিন্সিপালকে বিচার দিয়েছি তারপর আরও বেশি আমাকে বিরক্ত করছে।।।।
আর আজকের পর তো মনে হয় আরও বেশি করে আমায় বিরক্ত করবে।।।।
বন্ধুরা ঃ তো আমরা কি চুপ করে থাকবো নাকি।।।। এতো চিন্তা করিস না তো।।
। সামনে আমাদের কি কি প্লান আছে ওইটা চিন্তা কর।।।।
বিকালে মেঘা আর ওর বন্ধুরা ঘুরতে গেলো।।।। নদীর পাড়ে বসে আছপ ওরা।।
কেউ গিটার বাজাচ্ছে আর সবাই একসাথে গান গাইছে।।।। হঠাৎ একটা
ছোট মেয়ে মেঘার কাছে আসলো।।।। মেয়েটা ফুল বিক্রি করে।।। নদীর পাড়ে
প্রায় সময়ই দেখা পাওয়া যায়।।। তাই মেঘা মেয়েটাকে মোটামুটি চিনে।।।
মেয়েটা মেঘার কাছে এসে একটা গোলাপ দিলো আর বললো,,,
মেয়েটা ঃ আপু এক ভাইয়া আপনাকে এটা দিতে বললো।।।
মেঘা ভাবছে ওকে গোলাপ কে দিবে।।।। রবির তো দেওয়ার কথা না আর ও
দিলেও নিজে এসে দিবে।।। অন্য কাউকে দিয়ে পাঠাবে না।।।। মেঘা গোলাপটা
নিয়ে মেয়োটাকে বললো,,,
মেঘা ঃ তোমাকে এটা কে দিতে বললো????
মেয়েটি ঃ এক ভাইয়া আপনাকে এটা দিতে বললো।।।।
মেঘা ঃ সে এখন কোথায় আছে তুমি জানো????
মেয়েটি ঃ না আপু,,,,, সে আপনাকে এটা দিতে বলে চলে গেছে।।।।
এটা বলেই মেয়েটা চলে গেলো।।।। মেঘা গোলাপটার সাথে একটা চিরকুট
দেখতে পেলো।।।। চিরকুটটা খুলে পড়তে লাগলো মেঘা।।।।
চিরকুটে লেখা,,,,
ফুলের মতোই নিষ্পাপ আর সুন্দর তুমি।।। তোমাকে দেখলে নিজেকে হারিয়ে
ফেলি।।। জানি না এটা ভালোবাসা কি না।।।। যদি ভালোবাসা হয় তাহলে
আমি তোমাকে ভালোবাসি।।।
শেষে লেখা,, অপরিচিত একজন।।। মেঘা বুঝতে পারছে না এটা কে পাঠালো।।
হঠাৎ মেঘার ম্যাসেজগুলোর কথা মনে পড়ে গেলো।।। মেঘাকে ১৫ দিন পরপর
আলাদা আলাদা নাম্বার থেকে কেউ ম্যাসেজ পাঠায়।।। কবিতার মতো কিছু
লেখা থাকে তাতে।।।। এরকম ৩/৪ টা হবে ম্যাসেজ।।। নাম্বার গুলোয় কল
দিয়েছিলো মেঘা কিন্তু সবগুলো বন্ধ।।। আর আজকে এই গোলাপ দিলো
আবার কেউ।।। এই দুইটার সাথে কি কোনো সংযোগ আছে নাকি আলাদা
আলাদা ব্যাক্তি।।। মেঘাকে চুপ থাকতে দেখে ওর বন্ধুরা বললো,,,,
বন্ধু ঃ এতো ভাবিস না তো।।। কত ছেলেই তো তোকে গোলাপ দিলো।।।
আর আজকে রোজ ডে তাই হয়তো দিয়েছে।।।
মেঘা ঃ আর দিবে কে সেটাই তো ভেবে পাচ্ছি না ।।। আমার রহস্য ভালো
লাগে না।।। আর ম্যাসেজগুলোই বা কে পাঠায়???? আজকে আবার গোলাপ।
বন্ধু ঃ হবে হয়তো কোনো হাদারাম,,, যে সামনে এসে বলতে ভয় পাচ্ছে তাই
এসব করছে।।। এখন এসব নিয়ে ভাবা বন্ধ কর তো।।।
মেঘা ভাবাভাবি বন্ধ করে আড্ডায় মন দিলো।।। ওরা মাঝে মাঝেই নদীর পাড়ে
এসে সবাই মিলে গান গায়।।। অন্যদিকে রবিকে ওর বন্ধুরা হাসপাতালে ভর্তি
করলো।।। ডাক্তার এসে ব্যান্ডেজ করে দিলো আর কিছু ঔষধ লিখে দিলো।।
রবি চুপচাপ রয়েছে।। ওর বন্ধুরা সবাই ওকে অনেক কিছু বলছে কিন্তু রবি
কোনো কথা বলছে না।।। একজন বলে উঠলো,,,
১ম বন্ধু ঃ দেখলি তো কি হলো।।। যা আরও ওকে ভালোবাসার কথা বল।।।
আর ও তোকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিক।।।
২য় বন্ধু ঃ ভাই এসব বাদ দে এখন ।।। ও তোকে ভালোবাসে না।।। তারপরও
ওকে বিরক্ত কেনো করিস বল তো।।। এভাবে ওর পিছু পরে থাকলে কোনো
লাভ তো হবে না।।।
১ম বন্ধু ঃ এবার তো একটু পরিবর্তন হ।।। তোর জন্য কত মেয়ে পাগল
আর তুই কিনা মেঘার জন্য এভাবে মার খাচ্ছিস।।।
রাতে মেঘার বাবা বাসায় আসলে মেঘা তাকে রবির ব্যাপারে বলে সবকিছু।।।
এতদিন মেঘা চুপ করে ছিলো কিন্তু এখন আর চুপ করে থাকা যাবে না।।।।
এখন যদি ওর বাবাকে না বলে তাহলে পরে আরও অনেক সমস্যা হতে
পারে।।।। তাই সবকিছু বিবেচনা করেই মেঘা ওর বাবাকে বলার সিন্ধান্ত
নিয়েছিলো।।। সবগুনে মেঘার বাবা বললো,,,
মেঘার বাবা ঃ ও তোকে এতো বিরক্ত করে আর তুই আমাকে আগে বললি
না কেনো???? ছেলেটা তো খুবই খারাপ মনে হচ্ছে।।।
মেঘা ঃ আমি চাইনি তোমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হোক তাই এতদিন বলিনি।।। কিন্তু
আর পারছি না।।। ও দিনের পর দিন অনেক বেশি বিরক্ত করছে আমাকে।।।।
মেঘার বাবা ঃ তুই চিন্তা করিস না আমি ওর বাবাকে বলতেছি।।।।
মেঘার বাবা সাথে সাথেই,,,,,,,,,,,,,
মেঘার বাবা সাথেই রবির বাবাকে কল দিয়ে সবকিছু বললো।।।
আমি বিছানায় সুয়ে আছি,,, শরীরেও অনেক দূর্বল।।। কি মারটাই না খেলাম।।।
তবে এটা তো এখানেই শেষ হবে না।।।। সময় আমারও আসবে তখন সব
হিসাব নিবো।।।। হঠাৎ মা রুমে আসলো,,,,,,
মা ঃ কি হয়েছে তোর, এভাবে শুয়ে আছিস কেনো???? খাবি না????
আমি ঃ ভালো লাগছে না তাই শুয়ে আছি।।।। আর খেতে ইচ্ছে করতেছে না।।।
মা ঃ তোর কি শরীর খারাপ????
আমি ঃ না।।।। আমি একদম ঠিক আছি।।।। যাও তুমি,,, আমি ঘুমাবো।।।।।
বাবা বাসায় এসে চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিলো।।।।তখন মা বললো,,,
মা ঃ কি হয়েছে তোমার????
বাবা ঃ তোমার আদরের ছেলে কোথায়।।।। সে আজকাল কি করে তার কি
খবর রাখো।।।।
মা ঃ রবি আবার কি করলো????
বাবা ঃ ও শরিফের মেয়েকে বিরক্ত করে কলেজে।।।। মেয়েটা তার বাবার
কাছে বিচার দিছে রবির নামে।।।।। শরিফ যখন বল্লো,,, আমার ছেলে ওর
মেয়েকে বিরক্ত করে তখন কতটা ছোট হয়েছি আমি একবারও সেটা চিন্তা
করেছো।।।।।
মা ঃ কি বলছো এসব???? রবি কেনো ওকে বিরক্ত করবে????
বাবা ঃ সেটা তো তোমার ছেলেই বলতে পারবে।।।। ডাকো ওকে।।।।।
মা ঃ ও ঘুমাচ্ছে।।।।
বাবা ঃ এখন তো ঘুমাবেই।।। পড়ালেখা তো আর নেই।।।। ওর জন্য আজকে
আমার মান সম্মান সব শেষ।।।।।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেতে আসলাম।।।। আমাকে দেখেই
বাবা বললো,,,
বাবা ঃ তুই মেঘাকে কেনো বিরক্ত করিস????
বাবার কথা শুনে তো অবাক হয়ে গেলাম।।। বাবাকে এটা কে বললো বুঝলাম
না।।।।
আমি ঃ আমি আবার কখন মেঘাকে বিরক্ত করলাম???
বাবা ঃ আবার মিথ্যা কথা বলিস।।।।মেঘা ওর বাবার কাছে বিচার দিয়েছে।।।
তুই যদি আর কখনো মেঘাকে বিরক্ত করিস তাহলে তোর এখানে থাকা
বন্ধ।।।।।
কি মেয়ে রে বাবা।।। মার খাওয়ালো আবার বিচারও দিলো।।।।
ক্যাম্পাসে চুপ করে বসে আছি।।।। হঠাৎ বন্ধুরা বললো,,,
বন্ধুরা ঃ তোকে মেরেছে সেটা ক্যাম্পাসের সবাই জেনে গেছে।।।।
আমি ঃ ভালো।।। বাদ দে তো।।।।
অন্য দিকে মেঘা,,বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছি হঠাৎ একটা ছেলে এসে বললো,,
আপনার নাম কি মেঘা????
মেঘা ঃ হ্যা কেনো?????
ছেলোটা আমার হাতে একটা বাক্স দিলো আর বললো,,,
একজন আপনাকে এটা দিতে বললো।।।।।
এটা বলেই ছেলেটা চলে গেলো।।।।।
মেঘা ঃ আজকে আবার এটা কে পাঠালো???? বুঝতেছি না কে এসব
পাঠাচ্ছে।।।।
মেঘার বন্ধুরা বললো,,,
বন্ধু ঃ হা হা হা আজকে আবার কি পাঠালো তোর রোমিও????
মেঘা ঃ ধ্যাত ফাইজলামি করিস না তো।।।। ছেলেটা কে হতে পারে
বলতো????
রবি দূর থেকে মেঘাকে দেখছে আর ভাবছে, কোনোদিনও কি মেঘা
ওকে ভালোবাসবে???? রবি ভাবছে মেঘার হাতে ওই বাক্সটা কে দিলো?????
যে করেই হোক তাকে খুজে বের করতেই হবে৷।।।। মেঘা অন্য কারো হয়ে
যাবে রবি তা চিন্তাও করতে পারে না।।।। রবির বন্ধুরা এসে ওকে বললো,,,
বন্ধু ঃ তুই কও ভালো হবি না???? এতো কিছু বললাম এখন আবার মেঘার
দিকে তাকিয়ে আছিস।৷।।।
হয় জন ঃ চল তো এখান থেকে।।।।
রবি ঃ তোরা যা আমি পরে আসছি।।।। মেঘাকে কেউ এসে একটা বক্স দিলো।।
ওটার ভিতরে কি আছে তা দেখতে হবে।।।।
বন্ধু ঃ ওটার ভিতরে কি আছে তাতে তোর কি???? হয়তো কোনো ছেলে
চকলেট পাঠিয়েছে, কারন আজকে তো আবার চকলেট ডে।।।।।
রবি ঃ কি বলিস???? ওই ছেলেকে তো মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিবো।।।
ওর এতো বড় সাহস মেঘাকে চকলেট পাঠায়।।। দোস্ত কোন ছেলেটা মেঘাকে
এসব পাঠাচ্ছে তাকে খুজে বের করতে হবে।।।।
বন্ধু ঃ চুপ করতো তুই।।। যেখানে মেঘার কোনো সমস্যা হচ্ছে না সেখানে
তুই এ রকম করছিস কেনো???? তুই ভালো করেই জানিস মেঘা তোর বাবার
কাছে বিচার দিছে তারপরও এরকম করছিস কেনো????
হয় জন ঃ তুই বুঝতে পারছিস ,, তোর জন্য কলেজে আমাদের ডিপার্টমেন্টের
কত সমস্যা হচ্ছে।।।। স্যাররা পর্যন্ত আমাদেরকে খারাপ স্টুডেন্টের কথা না হয়
বাদই দিলাম।।।।তুই মেঘাকে বিরক্ত করিস তাতে কি কলেজের কেউ তোকে
ভালো বলে বল????
রবি ঃ পুরো কলেজ আমাকে খারাপ ভাবলেও আমার কিছু যায় আসে না।।।।
কারন আমি মেঘাকে ভালোবাসি।।।। তাই কে কি বললো আমি তা পরোয়া করি
না।।।।।
বন্ধু ঃ তোর একার ভালোবাসায় কি এসে যায়।।।। মেঘাকোও তো
ভালোবাসতে হবে।।।। আর মেঘা তোকে সয্যই করতে পারে না।।।। ভালোবাসা
তো দূরের কথা।।।। তারপরও তুই এভাবে মেঘার পিছু পরে আছিস।।।।। এটা
কেমন ভালোবাসা আমি বুঝতেছি না।।।।
অন্যদিকে মেঘা বক্সটা খুলে অনেকগুলো চকলেট দেখতে পেলো আর সাথে
একটা চিরকুট।।।। মেঘা ভাবতেছে কে এসব পাঠাচ্ছে????? সে সামনে
কেনো আসছে না।।।।তখন মেঘার বন্ধু বললো,,,
বন্ধু ঃ হা হা হা,,, আজকে চকলেট ডে তাই তোর জন্য এতোগুলো চকলেট
পাঠিয়েছে।।। ছেলেটা সত্যিই পাগল তোর জন্য।।।।
মেঘা ঃ ছেলেটা কে সেটাই তো জানতে পারলাম না।।। ছেলেটাকে দেখা না
পর্যন্ত শান্তি পাবো না।।।
বন্ধু ঃ হা হা হা,,,, কেনো প্রেমে পরে গিয়েছিস তার????
মেঘা ঃ আরে না।।। কৌতুহল হচ্ছে অনেক তাই।।। আচ্ছা চিরকুটটা পড়ে
দেখি তো।।।।
মেঘা চিরকুটটা খুলে পড়তে লাগলো,,,,
চিরকুটে লেখা ছিলো,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
মেঘা চিরকুটটা খুলে পড়তে লাগলো,,,
চিরকুটে লেখা ছিলো,,,
জানিনা কখনোও তোমার সামনে আসার সাহস হবে কিনা, তাতে কি আমি
তো তোমাকে দূর থেকেই ভালোবাসি।।।।
এদিকে রবির বন্ধুরা ওকে বলতেছে,,,
বন্ধু ঃ দেখলি তো নিজের চোখে এখন।।।। যা বলেছিলাম তাই হলো।।।। কিছু
দিন পর দেখবি মেঘাও ওই ছেলেটাকে ভালোবাসে।।।। এখনও বলছি ফিরে
আয় ওর মায়া থেকে।।।।
রবি কোনো কথা না বলে চুপচাপ ওখান থেকে চলে আসলো।।।। নদীর পারে
এসে একা একা হাঁটছে আর ভাবছে,,, মেঘা কেনো ওর ভালোবাসা বুঝতেছে
না।।।। সেই ছোটবেলা থেকে ও মেঘাকে ভালোবাসে।।।। কোনোদিনও কি
মেঘা ওর ভালোবাসা বুঝবে???
রাতে একা একা হাটছি আর সিগারেট খাচ্ছি , হঠাৎ মোবাইলে কল আসলো।।।
অনেক রাত হয়ে গেছে কিন্তু এখনো বাসায় যাইনি তাই মা কল দিয়েছে।।।
মা ঃ কোথায় তুই???? এখনও বাসায় আসছিস না কেনো??? তোর বাবা
অনেক রাগারাগি করছে।।।।।
রবি ঃ এই তো রাস্তায় আছি।।।। বাসায় আসতেছি।।।।
বাসায় আসার পর বাবা অনেক রাগারাগি করলো।।।।
বাবা ঃ এতো রাত পর্যন্ত কোথায় ছিলি????
রবি ঃ বন্ধু দের সাথে ছিলাম।।।।।
বাবা ঃ এতো রাত পর্যন্ত বন্ধুদের সাথে কি???? মনে হচ্ছে তোকে আর
এখানে রাখা যাবে না।।।। ঢাকা তোর মামার বাসায় পাঠিয়ে দিতে হবে।।।।
অন্যদিকে মেঘা বিছানায় সুয়ে আছে আর অচেনা ছেলেটার কথা ভাবতেছে।।।
তবে কি ও ছেলেটাকে ভালোবেসে ফেললো।।।।। বুঝতে পারতেছে না মেঘা।।।।
তবে ছেলেটার প্রতি ওর কৌতুহল দিন দিন বেড়েই চলেছে।।।। হঠাৎ মেঘার
মোবাইলে অপরিচিত একটা নম্বর থেকে কল আসলো।।।।
রিসিভ করে অপর পাশ থেকে কোনো শাড়া শব্দ পেলো না।।।।। কে আপনি???
কথা বলছেন না কেনো???? কিন্তু অপর পাশ থেকে কোনো উত্তর পেলো না।।।
কল কেটে গেলো।।। মেঘা আবার ঐ নাম্বারে কল দিলো কিন্তু নাম্বার বন্ধ।।।।
মেঘা ঃ কে কল দিলো??? ওই অপরিচিত ছেলেটা দিলো না তো আবার।।।।
রবি মেঘার সাথে কথা না বলেই কল কেটে দিলো।।। বুঝতে পারছিলো না কি
বলবে।।।। যদি বলতো ও রবি তাহলে হয়তো আবার মেঘা রাগ করতো।।।। আর
রবি মেঘাকে রাগাতে চায়নি তাই কল কেটে দিলো।।। মেঘা মনে মনে ভাবছে
হয়তো সেই অপরিচিত ছেলেটই হবে।।।। কেনো যে ছেলেটা সামনে আসছে
না।।। মেঘার কৌতুহল হচ্ছে।।।।।
মেঘা ঃ আচ্ছা ছেলেটা সামনে আসলে তখন তাকে আমি কি বলবো????
ধ্যাত এখন এতো ভাবছি কেনো।।। যখন সামনে আসবে তখন দেখা যাবে।।।।
হয়তো কখনো সামনে নাও আসতে পারে।।।।।
কিছুদিন পর,,,
আজকে প্রপোজ ডে।।। রবি ভাবছে মেঘাকে কলেজের সবার সামনে প্রপোজ
করবে।।।। কিন্তু রবি জানে না মেঘা কি রিজেক্ট করবে।।।। রবির বন্ধুরা ওকে
অনেক বোঝাচ্ছে এরকমটা না করতে।।।।।
বন্ধু ঃ ভাই মেঘা তোকে ভালোবাসে না।।।। হয়তো কখনো ভালোবাসবেও না।।
তুই এভাবে কলেজে সবার সামনে মেঘাকে প্রপোজ করলে নতুন কোনো
ঝামেলা সৃষ্টি হবে।।। তুই মেঘার সাথে কথা বললেই ঝামেলা সৃষ্টি হবে।।।।।
আর সেখাতে তো তুই ওকে প্রপোজ করতে যাচ্ছিস।।।। প্লিজ ভাই আর কোনো
ঝামেলা করিস না।।।। এভাবে নিজের লাইফটা নষ্ট করিস না।।।।।
তোর বাবা কি বলেছিলো ভুলে গেলি??? এখান থেকে যেতে না চাইলে
মেঘাকে ভুলে যা।।।।।
রবি ঃ মেঘাকে না পেলে এমনিতেই আমার লাইফ শেষ হয়ে যাবে।।।
বেঁচে থেকেও জিন্দালাশ হয়ে যাবো।।।।
রবি কারো কথা না শুনে মেঘাকে প্রপোজ করতে গেলো।।।। মেঘা কলেজ
ক্যাম্পাসে ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো হঠাৎ রবি মেঘাকে বললো,,
রবি ঃ জানিনা কেনো তুমি আমাকে অবহেলা করো???? সেই ছোটবেলা
থেকে তোমাকে বালোবাসি আর যতদিন বাঁচবো ততদিন তোমাকেই
ভালোবেসে যাবো।।।।
রবি গোলাপটা মেঘার দিকে বারিয়ে দিলো।।। কলেজের সবাই অধিক আগ্রহে
তাকিয়ে আছে, কি হচ্ছে সেটা দেখার জন্য।।। মেঘা গোলাপটা নিয়ে নিচে ফেলে
দিলো।।।।
মেঘা ঃ তুই কি সাইকো একটা??? আর কতবার বলবো আমি তোকে
ভালোবাসি না।।। তারপরও আবার এসেছিস।।।
রবি ঃ আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।।।৷ থাকতে পারবো না তোমাকে
ছাড়া।।
তখন মেঘার বন্ধু বললো,,
বন্ধু ঃ মেঘা কি বললো শুনতে পাস নি।।। ওই দিনের মারের কথা এতো তারা
তারি ভুলে গেলি।।। আবার মার খেতে না চাউলে এখনই চলে যা এখান থেকে।।।
রবি ঃ আমি তোর সাথে কথা বলছি না।।। তুই চুপ থাক।।।
রবির মাথায় রক্ত উঠে গেলো।।। সাথে সাথেই ওকে মারতে শুরু করলো।।। এর
ভিতর রবির বন্ধুরাও চলে এসেছে লাঠি নিয়ে।।। এমনিতেই ওদের উপর রাগ
আছে।।।। রবির এখন উল্টা পাল্টা বলে মাথাটা আরও খারাপ করে দিলো।।।
রবি আর ওর বন্ধুরা ইচ্ছামতো মারতে লাগলো ওদের।।। ওরা সবাই রক্তাক্ত
অবস্থায় আছে।।। স্যার ইতিমধ্যেই পুলিশকে জানিয়ে দিয়েছে।।। পুলিশ
আসার আগেই ওদেরকে ইচ্ছামতো মারলো।।।। পুলিশ এসে আহত দের
হাসপাতালে নিয়ে গেলো।।।।
রবি আর ওর বন্ধুদের থানায় নিয়ে গেলো।।।
তিনদির পর,,,
আজকে কলেজে বিচার হবে।।। রবির বাবা আর মোর বাবাও চলে এসেছে।।।
আরও যারা জরিত সবার গার্জিয়ান এসেছে।।।। স্যাররা মারামারির কারন
জানতে চাইলো,,,তখন মেঘার বন্ধু বললো,,,
ঃ স্যার রবি সবসময়ই মেঘাকে অনেক বিরক্ত করে।।। আপনার কাছে
অনেক বার বিচারও দিয়েছিলাম।।। আজকে আবার এসে মেঘাকে
বিরক্ত করা শুরু করলে আমরা ওকে চলে যেতে বলি তখন রবি আর ওর
বন্ধুরা আমাদের উপর লাঠি দিয়ে আঘাত করে।।।।
রবি ঃ স্যার ওরা মিথ্যা বলছে।।। ওই দিন ওরা সবাই মিলে আমাকে অনেক
মেরেছিলো।।। আমার বন্ধরা আমাকে হাসপাতালেও নিয়ে গেছিলো।।। আজকে
ওরা আমার বাবার নামে উল্টা পাল্টা বলছিলো তাই আমি চুপ থাকতে
পারিনি।।।।আর আমি মেঘাকে বিরক্ত করছি না।।। ওকে ভালোবাসি সেটা
শুধু ওকে বলি।।।।।।
তখন স্যার বলে,,,
স্যার ঃ এটা টিক ওরা রবির নামে আমার কাছে বিচার দিয়েছিলো।।।। আমি
মেঘাকে ওর বাবাকে জানাতে বলি।।।।
মেঘার বন্ধু বললো,,,
ঃ স্যার ও মিথ্যা বলছে।।। আমরা ওকে মারিনি আর ওর বাবাকে নিয়েও
উল্টা পাল্টা কিছু বলিনি।।। আপনারা মেঘাকে জিজ্ঞেস করতে পারেন।।।
সত্তিটা কি ও আপনাদের বলবে।।।।
স্যার রা মেঘার কাছে জিজ্ঞেস করলে,, মেঘা বললো,,,
মেঘা ঃ,,,,,,,,,,,,৷
স্যার রা মেঘাকে জিজ্ঞেস করলে মেঘা বললো,,,,
মেঘা ঃ রবি সবসময় আমাকে বিরক্ত করে আর খারাপ ব্যবহারও করে।।।
আর আমার বন্ধরা ওকে মারেনি ওর বাবাকেও কিছু বলেনি।।।। রবি আর ওর
বন্ধুরা এদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে মেরেছে।।।।
মেঘার কথা শুনে তো রবি অবাক হয়ে গেলো।।।।। রবি ভাবতেছে মেঘা এসব কি
বলছে।।।। সব শয্য করতে পারি কিন্তু আমার নামে মিথ্যা কথা বললে একদমই
শয্য হয় না।।।। মেঘার কথা শুনে অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।।।।।
ও এটা কিভাবে বলতে পারলো।।।। ওর সামনেই ওরা আমাকে মারলো আজকে
আবার আমার বাবার নামে উল্টা পাল্টা বললো আর ও বলছে ওরা কিছুই
করেনি।।।। ওকে ভালোবাসি তারমানে এই নয় যে ওর জন্য নিজের বাবাকেও
কিছু বললে তা চুপ করে শুনবো।।।
অনেক্ষণ চুপ করে সবার কথা শুনছিলাম।।।। আমি ইচ্ছাকৃত ভাবেই মেঘার
বন্ধুদেরকে মেরেছি আর ওইদিন ওরা আমাকে মারেনি মিথ্যা বলেছিলাম আমি।।।
আমি মেঘাকে ভালোবাসতাম তাই এসব করছি।।।। আমার বন্ধুদের কোনো
দোষ নেই সব দোষ আমার জন্য হয়েছে।।।৷ আর আমাকে কলেজ থেকেও
বের করে দিতে পারেন।।।।
তখম রবির বন্ধু বললো,,,,,
বন্ধু ঃ কি বলছিস এসব মাথা ঠিক আছে তো তোর।।। কেনো মিথ্যা বলছিস।।
রবি ঃ যা বলেছি ঠিকি বলেছি তোরা চুপ কর।।।
রবির কথা শুনে মেঘা ভাবছে,,, রবি সবকিছু স্বিকার করে নিলো কেনো????
যাইহোক ভালোই তো হয়েছে।।।। অবশেষে রবির একটা উচিত শিক্ষা হয়েছে।।।
রবি সব দোষ ওর নিজের উপর নিলো।।।। ও কখনো ভাবতেও পারে নাই মেঘা
এমন করবে।।।।
কতোটা ভালোবাসতো মেঘাকে আর মেঘা ওর জন্য এমন করলো।।।। একদিন
মেঘা এর জন্য অবশ্যই পস্তাবে।।।। রবির কলেজ থেকে বের করে দেওয়া
হলো।।।। রবির বন্ধুরা সবাই ওর উপর রেগে আছে।।।। ও কেনো সবকিছু
নিজের ঘারে নিলো।।।।।।
রাতে রবির বাবা ওকে ঢাকা ওর মামার কাছে পাঠিয়ে দিলো।।।। আর কল দিয়ে
ওর মামাকে সবকিছু বলে দিলো।।।।
কিছুদিন পর,,,
রবি ওখানকার একটা কলেজে ভর্তি হয়েছে।।।। রবির মধ্যে অনেক বড় একটা
পরিবর্তন এসেছে আগের মতো আর সহজে কারো সাথে মিশে না।।।।। সবসময়
চুপচাপ থাকে।।।। কলেজে যায় আর আসে।।।। কারো সাথে কথা বলে না।।।।
কলেজে একটা মেয়ে একটা ছেলেকে বললো,,
মেয়েঃ দোস্ত ছেলেটা কে রে কারো সাথে কথা বলে না সবসময় চুপচাপ থাকে।।।।
ছেলে ঃ জানি না।।। মনে হয় নতুন ভর্তি হয়েছে।।।।
মেয়োঃ ওর কি সমস্যা আছে যে কারো সাথে মিশছে না।।।। দেখে তো গুন্ডাদের
মতো লাগছে কিন্তু এরকম থাকছে কেনো????
ছেলেঃ তুই কেনো ওর প্রতি এতো আগ্রহ দেখাচ্ছিস???? তোর যদি এতই কৌতুহল
হয় তাহলে তুই গিয়ে ছেলেটার কাছে জিজ্ঞেস কর।।।।
মেয়ে ঃ ধ্যাত কি বলিস। ।। আমি কেনো ছেলেটার সাথে কথা বলতে যাবো????
ছেলে ঃ তাহলে চুপচাপ থাক।।।।।।।
মেয়েটা রিহি।।। রিহি আর কোনো কথা বললো না।।।। মেঘা কলেজে এসে
ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে লাগলো।।।। আজকে আর রবি আসছে না।।।।
মেঘা ভাবছে আপদ বিদায় হয়েছে।।।। এখন নিজেকে স্বাধীন মনে হচ্ছে।।।।
মেঘা ওর বন্ধুদের বললো,,,,
মেঘা ঃ ধন্যবাদ তোদের রবি নামক প্যাড়া আমার জীবন থেকে দূরে রাখার
জন্য।।।। ওর জন্য নিজের স্বাধীনতাই হাড়িয়ে ফেলেছিলাম।।।। এভাবে আর
কিছুদিন চলতে থাকলে আমি পাগল হয়ে যেতাম।।।।
বন্ধু ঃ শুধু ধন্যবাদ দিলে তো হবে না।।। আমরা ট্রিট চাই।।।।
মেঘা ঃ আচ্ছা চল আজকে সারাদিন ঘিরবো আর ট্রিট দিবো।।।
রবি মেঘার জীবন থেকে চলে যাওয়াতে খুশি হয়েছে ঠিকই কিন্তু আর
একজনের জন্য ওর মন খারাপ হচ্ছে।।।। আর তা হচ্ছে অপরিচিত ওই
ছেলেটা।।।মেঘা দিন দিন ওই ছেলোটার প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ছে।।। হয়তো
ভাকোবেসে ফেলেছে মেঘা ওই ছেলেটাকে।।।।।
কিন্তু ছেলেটাকে কিভাবে খুজে পাবে???? বেকাটা তো সামনেই আসছে না।।।
ও কেনো বুঝছে না আমি ওকে ভালোবাসি।।।।।।
১০ দিন পর,,,,
রিহি আর ওর বন্ধুর কলেজ ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছিলোো হঠাৎ সেই
ছেলেটাকে( রবি) দেখলো একা একা বসে আছে আর নিচের দিকে তাকিয়ে
আছে।।।। রিহি ভাবছে ছেলেটা তো আমাদের সাথেই পড়ে তাহলে ওর সাথে
কথা বললে সমস্যা কোথায়।।।। ও এমন কেনো সেটা জানতে হবে।।।।।
রিহি ছেলেটার কাছে এসপ বললো,,,
রিহি ঃ তুমি এমন কেনো????
রবি মাথাটা উপরে উঠিয়ে দেখলো একটা মেয়ে ওকে এটা বললো,,,।।।।
তখন রবি বললো,,,,,
রবি ঃ কেমন????
রিহি ঃ এলিয়েন।।।। এভাবে চুপচাপ থাকো কেনো ক্লাসে???? কারো সাথে
কথা বলো না।।।। সবসময় একা একা থাকো।।।।। আর যখন দেখি মাথাটা
নিচু করে থাকো।।।।
রবি ঃ আপনি কি অনেক দিন ধরেই ফলো করেন আমাকে???
রিহি ঃ আমি কেনো তোমাকে ফলোকরবো????
রবি ঃ তাহলে বুঝলেন কি করে আমি সবসময় মাথা নিচু করে থাকি????
রিহি কিছুটা লজ্জা পেলে গেলো।।।। তখন রিহি বললো,,,
রিহি ঃ ক্লাসে সবসময় চুপচাপ থাকো।।।। কারো সাথে কথা বলো না তাই
লক্ষ্য করলাম।।। আচ্ছা তোমার নাম কি????
রবি ঃ রবি।।। আপনার???
রিহি ঃ রিহি।।।। আচ্ছা আমরা তো একই ক্লাসে পড়ি তাহলে আপনি করে
বলছো কেনো???? তুই করে বলবে।।।।
রবি ঃ সময় হলে বলবো।।।
রিহি ঃ আচ্ছা,, এখন এটা বলো তুমি চুপচাপ থাকো কেনো????
রবি ঃ একটা মেয়েকে ভালোবাসতাম তার জন্যই এখন এরকম হয়ে গেছি।।।
রিহি অবাক হয়ে রবিকে জিজ্ঞেস করলো,,,
রিহি অবাক হয়ে রবিকে বললো,,
রিহি ঃ ভালোবাসার সাথে চুপ থাকার কি সম্পর্ক????
রবি ঃ আমি মেঘাকে অনেক ভালোবাসতাম কিন্তু আফসোস আমার
ভালোবাসা ওর কাছে বিরক্ত মনে হতো।।।। ও শুধু আমাকেই ষবহেলাই
করে এসেছে।।।। আর এখন তো ওর থেকে দূরেই চলে এসেছি।।।।
রিহি ঃ মানে???
রবি রিহিকে সব ঘটনা বললো।।।। কেনো ও এখানে এসেছে মেঘা ওর সাথে
কি কি করেছে সবকিছু বললো।।।।
রিহি ঃ খুবই দুঃখ জনক৷।।। আচ্ছা ও তো তোমাকে ভালোবাসে না তারপরও
তুমি কেনো এতো ভালোবাসো কেনো????।
রবি ঃ জানি না।।।। আমি শুধু এটাই জানি ওকে ছাড়া আমি স্বাভাবিক
থাকবো না।।। কখনও আমাকে ভালোবাসবে কি না তাও জানি না।।।।
রিহি ঃ আমার মনে হয় মেঘাকে ভুলে যাওয়াটাই তোমার জন্য ভালো হবে।।।।
সবকিছু ভুলে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনে আসো।।।।
রবি ঃ হা হা হা আমি তো স্বাভাবিকই আছি
অন্যদিকে মেঘা এখনো অপরিচিত ছেলেটার খোজ পায়নি আর ছেলেটার
কাছ থেকে কোনো ম্যাসেজও পায়নি।।। মেঘা ওর বন্ধুদের সাথে নদীর পাড়ে
আড্ডা দিচ্ছে।।। সবাই কথা বলছে আর মেঘা চুপচাপ আছে।।।। ওর বন্ধুরা
ওকে বললো,,,,
বন্ধু ঃ তোর আবার কি হলো???? রবি তো আর এখানে নেই তাহলে এভাবে
চুপচাপ আছিস কেনো?????
মেঘা ঃ ভালো লাগছে না আমার।।।।
বন্ধু ঃ কেনো কি হয়েছে????
মেঘা ঃ আমি ওকে ভালোবেসে ফেলেছি।।।।।
বন্ধু ঃ কারে????
মেঘা ঃ ওই অপরিচিত ছেলেটাকে।।।। ও এখন আমায় ম্যাসেজও দিচ্ছে না।।।
আর সামনে তো আসছেই না।।। ওর আবার কিছু হলো না তো সেটা নিয়েই
অনেক চিন্তায় আছি।।।।।
বন্ধু ঃ তা অবশেষে কারও প্রেমে পড়লি।।।। আর এমন একজনকে
ভালোবেসে ফেললি যাকে তুই চিনিসও না।।।।
মেঘা ঃ বোকাটা যে কেনো সামনে আসছে না।।।।
৫ দিন পর।।।
রবি এখন মোটামুটি স্বাভাবিক আচরনই করে।।।।বন্ধুও হয়েছে অনেক।।। রিহির
সাথেও অনেক ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।।।। রিহি চায় রবি মেঘাকে ভুলে থাকুক।।
কিন্তু রবি কোনোদিনও তা পারবে না।।।। এটা নিয়েই রিহি রবির উপর অনেক
রাগ করে।।। এখানে আসার পর আজকে প্রথম রবি কোথাও ঘুরতে বের
হয়েছে।।।। রবি অবশ্য আসতে চায়নি কিন্তু রিহি জোড় করে নিয়ে আসলো।।।
রিহি রবিকে বললো,,,
রিহি ঃ এভাবে আড্ডা দিবি, ঘুরাঘুরি করবি তাহলে মন ভালো থাকবে।।।
সারাদিন বাসায় থাকলে এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়বি।।।।
রবি রিহিকে যত দেখছে ততই অবাক হচ্ছে।।।। ও সবার থেকে আলাদা।।।
সবকিছু সহজ ভাবে নেয়,, সবসময় হাসি খুশি থাকে।।।।
রবি ঃ আচ্ছা তুই কি সবসময় এভাবে হাসি খুশি থাকিস??? তোর লাইফে
মন খারাপ বলতে কিছু নেই????
রিহি ঃ না তো।।।। আমি তো সবসময় আড্ডা দিতেই পছন্দ করি।।।। বন্ধু দের
সাথে ঘুরাঘুরি করি পরাই বিন্দাজ লাইফ।।।। আমার সাথে যারা থাকে তারাও
একসময় আমার মত হয়ে যায়।।।। দেখবি তুইও একসময় আমার মত হয়ে
যাবি।।।।
রবি ঃ হা হা হা,, আর যদি না হই।।।
রিহি ঃ এটা অসম্ভব।।।।
অন্যদিকে মেঘা নদীর পাড়ে একা একা হাটতেছে হঠাৎ একটা ছেলের সাথে
ধাক্কা খেলো।।। মেঘা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেটা বললো,,,
ছেলে ঃ দেখে চলতে পারেন না।।।। চোখ কোথায় থাকে????
মেঘা ঃ আমার না হয় চোখ বাড়িতে ছিলো তা আপনার চোখ তো সাথেই
ছিলো তাহলে ধাক্কা খেলেন কেনো????
ছেলে ঃ আপনিই তো ইচ্ছে করে ধাক্কা দিলেন এখন আবার আমার দোষ
দিচ্ছেন।।।
মেঘা ঃ আজব তো কি বলতে চাইছেন।।।। আমি কেনো আপনাকে ইচ্ছে
করে ধাক্কা দিতে যাবো???
মেঘা আর কথা না বাড়ীয়ে ওখান থেকে চলে এসেছে।।। এক জায়গায় এসে
বসে আছে।।। কিছুক্ষন পর আবার সেই ছেলেটা এসেছে।।।
মেঘা ঃ আপনি আমার পিছু নিয়েছেন কেনো???? তাহলে কি তখন আপনি
ইচ্ছে করেই ধাক্কা দিয়েছিলেন।।।।। আচ্ছা বেয়াদব তো আপনি।।।।।
ছেলেটা কোনো কথা বলছে না শুধু হাসছে তা দেখে মেঘার রাগ আরও বেড়ে
গেলো।।। মেঘা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ছেলেটা বললো,,,,
ছেলে ঃ আপনি বললে চলে যাবো।।।।
মেঘা ঃ যান তো।।।।।
ছেলেটা চলে যেতে লাগলো হঠাৎ মেঘা কি মনে করে যেনো ছেলেটাকে ডাক
দিলো।।।।।
মেঘা ঃ এই যে শুনুন,,,৷
ছেলেটা ঃ জ্বি বলেন।।।।
মেঘা ঃ আপনি কে বলুন তো????
ছেলে ঃ হা হা হা, আমি আবার কে???
ছেলেটা কোনো কথা বলছে না শুধু হাসছে,,,
ছেলে ঃ আমি কে তা আমি নিজেও জানি না।।।
মেঘা ছেলেটাকে বললো,,,
মেঘা ঃ প্লিজ বলেন আমার মনে হচ্ছে আপনি আমায় চিনেন????
ছেলে ঃ হা হা হা, আমি আপনাকে কিভাবে চিনতে পারি???? আপনি তো এই
প্রথম আমাকে দেখলেন আর এর আগে তো আমাদের কথাও হয়নি, তাহলে
আমি আপনাকে চিনবো কি করে।।।
মেঘা ঃ আমি এতো কিছু বুঝি না, আমার মনে হয় আপনি আমাকে চিনেন
এখন প্লিজ বলেন কে আপনি????
ছেলে ঃ আপনি কারে ভাবছেন????
মেঘা ঃ আমি তো ভাবছি অপরিচিত ছেলেটা হবে যে আমাকে ম্যাসেজ
করতো।।।
ছেলেটা কোনো কথা বলছে না শুধু হাসছে।।।। ছেলেটা চলে যেতে লাগলো
আর মেঘা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।।।। হঠাৎ ছেলেটা পিছন ফিরে
মেঘাকে বললো,,,
ছেলে ঃ আপনি কি আমায় ভালোবাসবেন????
মেঘা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।।।। কি হইতেছে সেটা বুঝার চেষ্টা করতেছে।।।
ছেলেটা আবার বললো,,,
ছেলে ঃ ফুলের মতোই নিষ্পাপ আর সুন্দর তুমি ।।।। তোমাকে দেখলে
নিজেকে হারিয়ে ফেলি।।। জানি না এটা ভালোবাসা কি না যদি হয় তাহলে
আমি তোমাকে ভালোবাসি।।।। তুমি কি তোমার হাতটা ধরার অধিকার
আমায় দিবে???? কথা দিচ্ছি এই হাত সারাজীবন ধরে রাখবো।।।। কখনো
তোমায় কষ্ট দিবো না।।।।
মেঘা ভাবছে ও হয়তো স্বপ্ন দেখছে।।। এতদিন যাকে ভালোবেসে এসেছে
আজ সে ওর সামনে এসে ভালোবাসার কথা বলছে।।।৷ এটা কিছুতেই বিশ্বাস
হচ্ছিলো না ওর।।।।।
ছেলেটা মেঘার কাছ থেকে কোনো সাড়া পেলো না।।। ওর
মনে হলো মেঘা হয়তো ওকে ভালোবাসে না।।। ছেলেটা মন খারাপ করে চলে
যেতে লাগলো হঠাৎ,,,,,,,,,,,,,,
ছেলেটা মেঘার কাছ থেকে কোনো সারা পেলো না ।।।। ওর মনে হলো মেঘা
হয়তো ওকে ভালোবাসে না।।। ছেলেটা মন খারাপ করে চলে যেতে
লাগলো।।।। হঠাৎ পিছন থেকে কেউ এসে ওকে জড়িয়ে ধরলো।।।।
মেঘা ঃ এতই যখন ভালোবাসো তাহলে চলে যাচ্ছিলে কেনো????
ছেলেঃ তোমার চুপ থাকা দেখে আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে ভালোবাসো
না তাই চলে যাচ্ছিলাম।।।
মেঘা ঃ আচ্ছা তুমি এতো বোকা কেনো???? তুমি কি কিছুই বুঝো না।।।।।
কতদিন থেকে তোমার অপেক্ষাতে ছিলাম কিন্তু তুমি আসলে না।।।।
ছেলে ঃ আর কখনো তোমাকে ছেড়ে যাবো না।।।।
মেঘা ঃ মনে থাকে যেনো।।। আচ্ছা তোমার নাম কি????
ছেলে ঃ হা হা হা,, তুমি আমার নামও জানো না???
মেঘা ঃ ওই তুমি কখনো তোমার নাম বলেছো, যে জানবো।।।।।
ছেলে ঃ তাও ঠিক।।।।
মেঘা ঃ এই জন্যই তো তোমাকে বোকা বলি।।।। এখন বলো???
ছেলে ঃ রোহান।।।।
১০ দিন পর।।।
রবি ঘুমিয়ে ছিলো হঠাৎ মোবাইলের শব্দে ওর ঘুম ভাঙলো।।। মোবাইলটা
হাতে নিয়েই তো রবি অবাক হয়ে গেলো এতগুলো কল।।।। আজকে রিহি ওর
খবর করে ছাড়বে।।। তাড়াতাড়ি কল ব্যাক করলো রবি।।।।
রিহি ঃ এতক্ষণে কল দেওয়ার সময় হলো আপনার।।।। সেই কখন থেকে কল
দিয়ে যাচ্ছি আর মহারাজের কোনো খবর নাই।।।
রবি ঃ সরি রে,,, ঘুমিয়ে ছিলাম তাই টের পাইনি।।।।
রিহি ঃ ওই ১১টা পর্যন্ত কিসের ঘুম।।। রাতে কি চুরি ডাকাতি করতে
গিয়েছিলি??? যে এতক্ষন ঘুমানো লাগে।।।।।
রবি ঃ হা হা হা।।।
রিহি ঃ আবার হাসে।।।। আজকে তোর কপালে দুঃখ আছেরে।।। রবি
তারাতাড়ি কলেজে আয় ঘুরতে যাবো।।।।
কিছুক্ষন পর রবি ফ্রেশ হয়ে কলেজে আসলো।।। আসার পরই তো রিহির মাইর
শুরু হয়ে গেলো।।।।
রবি ঃ ভাই কেউ এই গুন্ডিটারে থামা একটু।।। এতো জোরে মারতেছে আমি
শেষ।।। আমার কি দোষ বল আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম গাই কল ধরতে পারিনি।
রিহি ঃ এতক্ষন কোনো সুস্হ মানুষ ঘুমায়?????
রবি ঃ হা হা হা,,, তাইলে আমি অসুস্থ।।।।।
রিহি ঃ চুপ আবার উল্টা পাল্টা বলে।।।। ওই তোর চোখ লাল কেনো????
রবি ঃ ঠিকভাবে ঘুমাতে না পারলে তো চোখ লাল থাকবেই।।।। তুই কল দিলি
তাই তো তারাতাড়ি ঘুম থেকে উঠলাম।।।।।
রিহি ঃ আসছে নবাবজাদা।।। ১১ টা তার জন্য বেশি কিছু না।।। ওই তুই রাতে
কি করিস বলতো????
রবি ঃ রাতেও ঘুমাই।।।।
হঠাৎ একজন এসে বললো,,
ঃ রবি এমা আসতেছে
রবি ঃ ভালোই তো আসতে দে।।।।
এই কথা বলার পর তো রিহি আরও রেগে গেলো।।। রিহি রবিকে বললো,,
রিহি ঃ ওই মেয়ের সাথে তোর কি????
রবি ঃ কথা বলবো।।।।
রিহি ঃ না।।। তুই ওই ফালতু মেয়ের সাথে কথা বলতে পারবি না।।।।।
এমা রবিকে প্রপোজ করছিলো।।। রবি ওকে ফিরিয়ে দিয়েছিলো।।। তারপর
থেকেই রিহি এমাকে সয্য করতে পারে না কিন্তু এমা রবির পিছু ছাড়ছে না।।।
রবিও রুহিকে রাগানোর জন্য এমার সাথে কথা বলে।।।। এমা রবির কাছে এসে
কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিহি বললো,,,
রিহি ঃ তুমি এখানে কেনো এসেছো।।। যাও ক্লাসে যাও।।।
এমা ঃ আমার এখন ক্লাস নাই আর আমি রবির সাথে কথা বলতে আসছি
তাতে আপনার কি????
রিহি ঃ তোমার সাহস তো কম না।।। আমরা তোমার সিনিয়র আর তুমি ওকে
নাম ধরে ডাকছো।।। এখনই প্রিন্সিপালের কাছে তোমার নামে বিচার দিবো।।।
নলবো তুমি আমাদের অসম্মান করছো।।।।
এমা ঃ রবির তো কোনো সমস্যা হচ্ছে না।।। তাহলে আপনার এতো জ্বলছে
কেনো???
রিহি রবিকে বললো,,
রিহি ঃ এরপরও তুই কিছু বলবি না????
রবি চুপ করে ওদের ঝগড়া করা দেখছিলো আর হাতেছিলো।।। রবিকে চুপ
থাকতে দেখে রিহি রাগ করে চলে গেলো।।। রিহির কাছে গিয়ে ওকে সরি
বললাম।।। আর সাথে সাথেই আমাকে থাপ্পড় খেতে হলো।।।। রিহিকে
বললাম,,,,
রবি ঃ এই থাপ্পড় কিসের জনয???
রিহি ঃ ওই মেয়েটার সাথে কথা বলার জন্য।।।। তা এখন আমার কাছে
এসেছিস কেনো??? যা না ওই মেয়েটার কাছে।।।।।
রবি ঃ আরে আমি তো তখন মজা করছিলাম।।।। তোকে রাগানোর জন্যই
তো ওই মেয়েটার সাথে ইচ্ছে করে কথা বলছিলাম।।।।
রিহি ঃ খুব ভালো কাজ করছেন।।।।
রবি ঃ আচ্ছা তুই কি আমাকে ভালোবাসিস??? কি হলো চুপ করে আছিস
কেনো??? আমি জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দে।।।
রিহি মাথা নিচু করে বললো,,,
রিহি ঃ অনেক ভালোবাসি তোকে।।। তাইতো তোকে অন্য কারো সাথে সয্য
করতে পারি না।।।।
রবি ঃ তুই জানিস আমি অন কাউকে ভালোবাসি।।। আমি কখনোই তোকে
ভালোবাসতে পারবো না।।। আমার মনে শুধুই মেঘার নাম রয়েছে।।। আমি
চাইলেও ওকে কখনো ভুলতে পারবো না, আর তোকে কখনো ভালোবাসতেও
পারবো না।।। এসব কিছু জেনেও আমাকে কেনো ভালোবাসিস????
রিহি ঃ জানি না আমি।।। নিজের অজান্তেই তোকে ভালোবেসে ফেলেছি।।।
আমি তোকে মেঘার কষ্ট ভুলিয়ে দিতে চাই।।।।
রবি ঃ তা কখনো সম্ভব না।।।। আমি তোকে কখনো ভালোবাসতে পারবো না।
তাই আমি চাইবো তুই আমাকে ভুলে যাস।।। কারন ভালোনাসার কষ্ট আমি
বুঝি।।।।
রিহি ঃ পারবো না আমি এটা করতে।।।। অনেক ভালোবেসে ফেলেছি তোকে।।
রবি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো,,,।
রবি ঃ তোর কাছে ভালোবাসা বড় না আমার বন্ধুত্ব বড়??? যদি তুই আমাকে
ভালোনাসিস তাহলে আমার বন্ধুত্ব হারাবি।।। চলে যাবো এখান থেকে দূরে
কোথাও।।।।
রিহির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।।। চোখের পানি মুছে রবিকে বললো,,
রিহি ঃ তোর ভালোবাসা,,,,,,,,
মেঘা রোহানকে বললো,,
মেঘা ঃ জোর করছো কেনো তাকে??? তার হয়তো কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাজ
আছে তাই হয়তো যতে চাইছে।।।
রবি ওখান থেকে চলে আসায় মেঘা অনেক খুশি হয়েছে।।। মেঘা চাইছিলো
না রবি কোনো ঝামেলা করুক আর রোহানও যাতে রবির ব্যাপারে কিছু জানতে
না পারে।।।
২ দিন পর,,,
রবি ওর আগের কলেজে এসেছে পুরাতন বন্ধু দের সাথে দেখা করতে।।।রবি
সবার সাথেআড্ডা দিতে লাগলো।।। হঠাৎ মেঘার বন্ধুদের দেখলো।।। রবি
ওদের সামনে গিয়ে বললো,,
রবি ঃ কেমন আছো তোমরা???
মেঘার বন্ধুরা কোনো কথা বলছে না।।। অবাক হয়ে রবির দিকে তাকিয়ে আছে।।
ভাবছে ওরা, রবি কেনো ওদের সাথে কথা বলতে আসলো।।।রবি আবার বলে
উঠলো,,,
রবি ঃ পুরোনো কথা ভুলে যাও।৷। যার জন্য তোমাদের সাথে ঝগড়া করতাম
সেই তো এখন অন্য করো তাহলে তোমাদের সাথে রাগ করে কি লাভ।।। অনেক
ঝগড়া করেছি তোমাদের সাথে।।। পারলে আমাকে মাফ করে দিও।।।
মেঘার বন্ধু ঃ আমরাও তোমার সাথে অনেক কিছু করেছি আমাদেরও মাফ
করে দিও।।। আচ্ছা কোথায় থাকছো তুমি।।।।।
রবি ঃ ঢাকাতে একটা কলেজে ভর্তি হয়েছি।।। এখানে অবশ্য আসতে
চাইছিলাম না।।। আসলে এই শহরটাকেই ভুলে থাকার চেষ্টা করেছি।।। পুরোনো
স্মৃতি যতই মনে পড়ে ততই কষ্ট বাড়ে।।।।
মেঘার বন্ধু ঃ তা তুমি কোনো রিলেশনে জড়িয়েছো????
রবি ঃ হা হা হা, একজনকেই ভালোবাসি আর তাকেই ভালোবেসে যাবো।।৷
তাকে পাওয়ার আশা কোনোদিনও করি না তারপরও তাকেই ভালোবাসবো।।।
মেঘার বন্ধু ঃ আচ্ছা মেঘার সাথে দেখা হয়েছে???
রবি ঃ হয়েছে তো।।। ওর বয়ফ্রেন্ড ওর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।।।
মেঘার বন্ধু ঃ মানে???
সবশুনে মেঘার বন্ধুরা বললো,,
মেঘার বন্ধু ঃ তোমার কষ্টটা বুঝতে পারছি কিন্তু কি আর করার বলো।।।।
মেঘা কলেজে এসে দেখলো ওর বন্ধুরা সবাই রবির সাথে কথা বলছে।।। মেঘা
ওদের ওখানে যাওয়ার পর সবাই চুপ করে আছে।।। মেঘা বুঝতে পারছে
না কি হচ্ছে রবি কেনো ফিরে এলো???? ও নতুন কোনো ঝামেলা করবে
না তো।।। রবি যদি রোহানকে উল্টা পাল্টা কিছু বুঝায় মেঘা অনেক ভয়ে
আছে।।৷ মেঘা রবিকে বললো,,,
মেঘা ঃ তুমি এখানে কেনো এসেছো??? আবার নতুন করে কি ঝামেলা
বাধাতে চাও??? তুমি রোহানকে উল্টা পাল্টা কিছু বলো নাই তো।।।।
রবি মেঘার কোনো কথার উত্তর না দিয়ে ওকে বললো,,
রবি ঃ কেমন আছো???
মেঘা ঃ আমি তোমাকে কি জিজ্ঞেস করছি আর তুমি কি বলছো??? তোমার
মতলব কি বলো তো???
রবি ঃ হা হা হা,,, মতলব তো অনেক কিছুই আছে।।। প্রথমে রোহানের সাথে
তোমার ব্রেকআপ করাবো তারপর তোমাকে জোড় করে বিয়ে করবো।।।
মেঘা রবির কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলো।।।
মেঘা ঃ আমি জানতাম তুমি এমনটাই কিছু করবে।।। যদি তুমি রোহানকে
উল্টা পাল্টা কিছু বলেছো তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।।।
আজকেই তুমি এই শহর থেকে চলে যাবে।।।।
রবি ঃ হা হা হা, ভয় পেয়ে গেলে??? যদি তুমি চাও আমি এমনকিছু না করি
তাহলে আমি যা বলবো তোমাকে তাই করতে হবে।।। বলো আমার শর্তে রাজি।।
মেঘা ঃ আমি তোমার কোনো শর্তে রাজি না।।। কেনো শুনবো আমি তোমার
কথা।।।।
রবি ঃ তাহলে আমিও রোহানকে উল্টা পাল্টা কিছু বুঝাবো আর রোহান তো
আমাকে অনেক বিশ্বাস করে।।। যদি তুমি রোহানকে হারাতে না চাও তাহলে
আমার শর্ত গোমাকে মানতেই হবে।।।।।
মেঘা ঃ কি শর্ত তোমার???
রবি ঃ আজকে থেকে ১০ দিন পর্যন্ত আমার সাথে তোমাকে প্রেম করতে
হবে।।।
তখন মেঘার বন্ধু বললো,,
মেঘার বন্ধু ঃ রবি কি বলছো তুমি??? তোমার মাথা ঠিক আছে তো???
রবি ঃ আমার মাথা একদম ঠিকই আছে কিন্তু মেঘা যদি আমার কথা মেনে
না নেয় তাহলে ওর মাথা ঠিক থাকবে না।।। এই ১০ দিন আমি যেমন বলবো
তোমায় তেমন করতে হবে।।।।।
মেঘা ঃ আমি কিছুতেই তোমার কথা মেনে নিবো না।।।।
রবি ঃ তাহলে আর কি করার।।। রোহানকে তো কিছু বলতেই হবে।।।।
মেঘা আর কোনো উপায় না পেয়ে রবির শর্তে রাজি হয়ে গেলো।।।
রবি ঃ হা হা হা, আমি তোমার সাথে খারাপ কিছুই করবো না।।। করতে
চাইলে তো অনেক আগেই জোর করে করতে পারতাম।।। এই ১০ দিন শুধু
তুমি আমার সাথে ভালোবাসার অভিনয় করবে আর কিছুই না।।।
মেঘা ঃ এমনটা করে তোমার লাভ কি??? তুমি আবার নতুন করে কোনো
প্লান করছো না তো???
রবি ঃ হা হা হা,, লাভ তো আমার আছেই।।। সেটা তুমি সময় হলেই জানতে
পারবে।।। আর রইলো প্লানের কথা তাহলে বলবো আমার কোনো প্লান নেই।।।।
রবির বন্ধুরা ওকে বললো,,,
রবির বন্ধু ঃ কি করতে চাচ্ছিস তুই বল তো??? হঠাৎ আবার তোর কি হলো?
এতোদিন তো এমন করিসনি????
রবি ঃ কিছুই হয়নি আমার আর না আমি কিছু করতে চাইছি।।। মেঘার সাথে
কেনো এমন করছি তা সময় হলেই জানতে পারবি।।।।
মেঘা বুঝতে পারতেছে না রবি কি,,,,,,,,,
মেঘা বুঝতে পারতেছে না রবি কি করতে চাইছে আর উদ্দেশ্যই বা কি।।। ১ম
দিন মেঘা রাতে পড়ছিলো হঠাৎ একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসলো।।।
মেঘা রিসিভ করে বুঝতে পারলো এটা রবি।।। তারপর সাথে সাথেই কল কেটে
দিলো।।। কিছুক্ষণ পর একটা মেসেজ আসলো।।।।মেসেজটায় লেখা ছিলো,,
যদি আমার সাথে কথা না বলো তাহলে দেখতে পারবে আমি কি করি।।
রোহানকে কিছু বলতে কিন্তু আমার ২ মিনিটও লাগবে না।।। তাই তুমি সিদ্ধান্ত
নেও কি করবে।।।
মোঘা মেসেজটা দেখে ভয় পেয়ে গেলো।।। মেঘা বুঝতে পারতেছে না রবি কেনো
এমন করছে।।। আগের থেকেও অনেক বেশি বিরক্ত করছে আর ব্লাকমেইল।।।
এর ভিতরে রবি আবার কল দিলো আর মেঘা সাথে সাথেই রিসিভ করলো।।।
মেঘা রবিকে বললো,,
মেঘা ঃ কি চাইছো তুমি আমার কাছে???
রবি ঃ হা হা হা, ভালোবাসা তোমার।।। আমি চাই তুমি রোহানকে ভুলে
আমাকে ভালোবাসো।।।।।
মেঘা ঃ ছিঃ কতটা নিচু মনের তুমি।।। আগের থেকেও অনেক খারাপ হয়ে
গেছো।।। আমি রোহানকে ভালোবাসি,,, না কখনো তোমাকে ভালোবেসেছি
আর ভালোবাসবো।।।।।
রবি ঃ আগেও খারাপ ছিলাম আর এখনো আছি।।। হ্যা এটাই আমি।।। আর
তুমি আমাদের শর্তের কথা এত তারাতারি ভুলে গেলে।।। আমাদের চুক্তি
হয়েছিলো যে আমরা ১০ দিন প্রেম করবো আর এই ১০ দিন তুমি শুধু আমার
কথাই শুনবে।।।।
মেঘা ঃ তুমি এখন যা করছো এর ফল তুমি একদিন অবশ্যই পাবে।।।
মেঘার ইচ্ছে না থাকা সত্তেও বাধ্য হয়ে রবির সাথে কথা বলতে হচ্ছে।।। রবি
মেঘার সাথে কথা বলছে আর মেঘা চুপচাপ শুনছে।।। রবি মেঘাকে বললো,,
রবি ঃ এই ১০ দিনে আমি তোমাকে একটা গল্প বলবো তবে প্রতিদিন একটু
একটু করে।।। আর তুমি সেটা মনো যোগ দিয়ে শুনবে।।। তারপর ১০, দিন
শেষ হলে আমি তোমাকে কিছু প্রশ্ন করবো আর তোমাকে সেগুলোর ঠিকঠাক
উত্তর দিতে হবে।।।। যদি না পারো তাহলে বুঝতেই পারছো কি হবে।।। তাই
গল্পটা মনযোগ দিয়ে শুনবে।।।
ছেলেটার বয়স ছিলো ১০ বছর আর মেয়েটাও একি বয়সের ছিলো।।। তাদের
বাবা মা চাইতো ওরা দুজনে একসাথে থাকুক সবসময়।।।। একজন আর
একজনের ভালো বন্ধু হবে।।। একে অপরের খেয়াল রাখবে এটাই তারা
চাইতো।।। ছেলেটার কাছে নিজের চেয়ে মেয়েটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।।। তাই
তো ছেলেটা সবসময় মেয়েটাকে খুশি করার চেষ্টা করতো।।। কিন্তু মেয়েটা
কেনো জানি ছেলেটাকে সয্য করতে পারতো না।।। ছেলেটা সবসময় মেয়েটার
সাথেই থাকতো।।। এতে করে মেয়েটা ছেলেটাকে অনেক বকা দিতো কিন্তু
ছেলেটা কিছুই মনে করতো না।।। মেয়েটার বাবা মা ওকে অনেক বুঝাতো
ছেলেটার সাথে ঝগড়া না করে দুজন একসাথে থাকে।।। কিন্তু মেয়েটা ছিলো
অনেক জেদি।।। কারো কথা শুনতো না।।।
রবি ঃ কি হলো ঘুমিয়ে গেলে??? ওই শুনতে পাচ্ছো???
মেঘা ঃ হ্যা শুনতে পাচ্ছি।।।
মেঘা প্রথম প্রথম টিকমতো মনোযোগ না দিলেও এখন গল্পটা ওর ভালো
লাগতে শুরু করলো আর মনোযোগ দিয়ে না শুনলে আবার সমস্যা হবে।।।
কারন রবি ১০ দিন পর এটা থেকে প্রশ্ন করবে তখন না পারলে আবার ঝামেলা
করবে।।। রবি আবার বলা শুরু করলো,,,,,
রবি ঃ একদিন বিকালে ছেলেটা দেখলো মেয়েটা একা একা কাদতেছে।।।
ছেলেটা দৌড়ে এসে মেয়েটার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলো, কাদতেছো
কেনো??? কি হয়েছে তোমার??? মেয়েটা কোনো কথা বললো না শুধু
কাদতেছে।।। হঠাৎ ছেলেটা দেখলো মেয়েটার হাত অনেকটা কেটে গেছে।।।
এটা দেখে ছেলেটা জিজ্ঞেস করলো,, এটা কিভাবে হলো??? মেয়েটার পাশে
কিছু ছেলেদের দেখিয়ে বললো,, ওরা ধাক্কা দিয়েছে।।। ছেলেটা কিছু বললো
না।।। কিছুক্ষণ পর মেয়েটাকে বাসায় দিয়ে আসলো।।। তারপর ফিরে এসে
ছেলেগুলোর কাছে গেলো আর যেই ছেলেটা মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়েছিলো ওর
মাথায় কিছু একটা দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।।। তার পরের দিন
ওর বাবা মা মেয়েটার বাবা মাকে বিচার দিতে আসলো আর তখন মেয়েটার
বাবা মা আর মেয়েটাও ছিলো।।। ছেলেটার বাবা মা ওকে জিজ্ঞেস করলো,,
তুমি ওকে কেনো মেরেছো??? ছেলেটা চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলো কোনো কথা
বললো না।।। তখন মেয়েটা বললো,, ও স্কুলেও সবার সাথে মারামারি করে।।।
ছেলেটার বানা আবার বললো , চুপ করে আছো কেনো??? আমি কিছু
জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দেও।।। কিন্তু ছেলেটা যথারিতি চুপ করে চিলো।
তারপর ওর বাবা মা ওকে অনেক বকা দিলো।। ওর বাবা তো ওকে থাপ্পর ও
মেরেছিলো, কিন্তু তাতে ছেলেটার চোখ থেকে একটুও পানি বের হলো না।।।
ছেলেটা মনে মনে ভাবলো ওকে আরও মারা উচিত ছিলো।।।
রবি ঃ হা হা হা, আজকে আর বলবো না।।। এখন শুনো কালকে আমি
তোমাকে কলেজে দিয়ে আসবো।।।
মেঘা ঃ আমি একা কলেজে যেতে পারি।।। কারো দিয়ে আসাতে হবে না।।।
রবি ঃ হা হা হা, শর্তের কথা আবার ভুলে গেলে।।। আমি যা বলবো তোমাকে
তাই করতে হবে।।।।
সকালে রবি মেঘার বাসার নিচে দাড়িয়ে ওকে কল দিলো।।। মেঘা ভেবেছিলো
রবি ভুলে যাবে কিন্তু তা হলো না।।। মেঘা বিরক্তিকর ভাব নিয়ে কলটা রিসিভ
করলো।।।।
মেঘা ঃ কি হয়েছে??? কল দিয়েছো কেনো???
রবি ঃ তুমি এতো ভুলে যাও কেনো??? এর জন্য ডাক্তার দেখাতে হবে।।।
রাতে কি বলেছিলাম গোমাকে, আমরা একসাথে কলেজে যাবো।।।
তারাতাড়ি রেডি হয়ে এসো আমি নিচে অপেক্ষা করতেছি।।।।
মেঘা কল কেটে দিলো ৷।। এর ভিতরে রোহান কল দিলো,,
রোহান ঃ শোনো,,,,,,,
মেঘা কল কেটে দিলো এর ভিতরে রোহান কল দিলো,,
রোহান ঃ শুনো একটা জরুরি কাজে আমি ঢাকা যাচ্ছি কিছুদিন পর
আসবো।।।
মেঘা ঃ কি হয়েছে ??? আগে তো কিছু বললে না।।। কোনো সমস্যা???
রোহান ঃ না তেমন কিছু না।।। হঠাৎ কাজ পড়ে গেলো এখন গাড়িতে
উঠবো।।
মেঘা ঃ আচ্ছা সাবধানে যেও আর পৌছে কল দিও।।।।
রোহান ঃ আচ্ছা ঠিক আছে ।।। রাখছি।।।
মেঘা কিছুটা চিন্তা মুক্ত হলো কারন রোহান এখানে থাকবে না।।। এখন ভালো
ভাবে ১০, দিন কেটে গেলেই হয়।।। তারপর রবিকে শিক্ষা দিবো।।। কিছুক্ষণ
পর মেঘা নিচে আসলো।।। অবস্য মেঘা ইচ্ছে করেই অনেক late করলো
যাতে রবি বিরক্ত হয়ে চলে যায় কিন্তু ওকে দেখে তো মনে হচ্ছে না ও বিরক্ত
হচ্ছে।।। মেঘা আসার পর রবি বললো,,
রবি ঃ তুমি এতো বোকা কেনো বলো তো??? তুমি কি ভেবেছিলে তুমি ইচ্ছে
করে late করে আসবে আর আমি বিরক্ত হয়ে চলে যাবো।।। হা হা হা, তা হচ্ছে
না জান।।। আমি তো তোমার জন্য সারাজীবন অপেক্ষা করতে পারবো।।।
কোনো রকম বিরক্ত হওয়া ছাড়া।।।।
মেঘা ঃ ওই একদম আমাকে উল্টা পাল্টা বলবে না।।।
রবি ঃ এখন কথা না বলে বাইকে উঠে বসো।।।।
মেঘা বাইকে উঠে বসলো।।। কিছুক্ষন পর মেঘা খেয়াল করলো রবি কলেজের
দিকে যাচ্ছে না।।।
মেঘা ঃ ওই কোথায় যাচ্ছো তুমি??? কলেজ তো অন্য দিকে।।।
রবি কোনো কথা বলছে না শুধু হাসছে।।।।
রবি ঃ তুমি একটু চুপ থাকবে প্লিজ।।। আমাকে ঠিকভাবে ড্রাইভ করতে দাও।।
আর কোথায় যাচ্ছি তা যাওয়ার পরই জানতে পারবা তাই এখন চুপচাপ
থাকো।।।।।
মেঘা আর কোনো কথা বললো না।।। চুপচাপ বসে রইলো।।। কিছুক্ষণ পর
রবি একটা পুরোনো জমিদার বাড়ির সামনে বাইক থামালো।।। জায়গাটা
অনেক সুন্দর ।।। মেঘা এর আগেও এখানে এসেছে।।। মেঘা রবিকে জিজ্ঞেস
করলো,,,,,
মেঘা ঃ আমরা এখানে কেনো এসেছি???
রবি ঃ বিয়ে করতে।।। আমরা দুজন বিয়ে করে এই জমিদার বাড়ীতেই
থেকে যাবো।।। বাড়ীটা তোমার পছন্দ হয়নি জান???
রবির কথা শুনে মেঘা ভয় পেয়ে গেলো অনেক।।। কি করবে বুঝতে পরতেছে
না।।। মেঘা রবিকে বললো,,,
মেঘা ঃ দেখো তুমি কিন্তু বেশি বেশি করছো।।। তোমার সাথে এসেছি
এখানে তারমানে এই নয় যে তোমার সব কথা মেনে চলবো আর আমাদের
কি চুক্তি হয়েছিলো ভুলে গেলে।।।।
রবি ঃ আরে চুক্তির কতা ছাড়ো আর এই জায়গাটাকে দেখো কি সুন্দর এটা
তাই না।।। যদি আমরা এখানে সারাজীবন থাকি তাহলে কেমন হবে বলো।।।
আমরা বিয়ে করবো, আমাদের বাচ্চা হবে, উফ! কত রোমান্টিক হবে
ব্যাপারটা।।।।
মেঘা ঃ দেখো আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো।।।।
রবি ঃ হা হা হা, করো চিৎকার ।। দরকার হলে তোমার সাথে আমিও করছি
কিন্তু আমার তো মনে হয় এখানে আশে পাশে কেউ নেই।।। এখন চলো
বাড়ীর ভিতরে যাওয়া যাক।।। আমি সবকিছু রেডি করে রেখেছি।।। এখনই
আমরা বিয়ে করবো।।। তারাতাড়ি করো সবাই আমাদের জন্য অপেক্ষা
করছে।।।।
মেঘা কান্না করে দিলো।।। রবিকে বললো,,,
মেঘা ঃ তুমি কেনো করছো এসব??? প্লিজ আমাকে যেতে দাও আমি তোমার
কাছে অনুরোধ করছি।।।।।
রবি ঃ এসব কি বলছো জান??? এখন এসব কথা বাদ দাও তারাতড়ি চলো
এখন।।।।
রবি মেঘাকে জোড় করে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে গেলো আর মেঘা কান্না করতেছে।
বাড়ীর ভিতরে ঢোকার পর মেঘা কাউকে দেখতে পেলো না।।। রবি তখন হাসতে
হাসতে বললো,,
রবি ঃ আমি তো ফান করছিলাম জান।।। তুুমি কি ভেবেছিলে এটা সত্যি।।।
এতো ভালোবাসো আমাকে তুমি??? অবশ্য তুমি চাইলে এটাও সত্যি হতে
পারে।।।
মেঘার মনে হলো ও প্রান ফিরে পেয়েছে৷ ।।। কতটা ভয় পেয়ে গেছিলো ও।।।
রবিকে বিশ্বাস নেই ও যে কখন কি করবে তার থেকে তারাতাড়ি এখান থেকে
যেতে হবে।।। মেঘা রবিকে বললো,,,
মেঘা ঃ আমার ভালো লাগছে না এখানে।।।। চলো যাই এখান থেকে।।।।
রবি ঃ হা হা হা,,, বিশ্বাস করতে পারছো না আমাকে।।।
রবির কথায় মেঘা আবাক হয়ে গেলো।।। ও ভাবছে রবি কিভাবে ওর
মনের কথা জানতে পারলো।।।।
রবি ঃ এখন তোমাকে গল্পটার বাকি অংশ বলবো।।।। আশা করি তুমি
মনোযোগ দিয়ে শুনবে।।। আর না শুনলে কি হবে তা তুমি ভালো করেই
জানো।।।।
মেঘা এমনিতেই গল্পটা শুনতে চাচ্ছিলো কিন্তু রবিকে বলতে পারছিলো না।।
মেঘা ঃ তুমি বলো আমি শুনতেছি।।।
রবি ঃ ছেলেটার চোখ থেকে একটুও পানি বের হলো না।।। ছেলেটা মনে মনে
ভানলো ওকে আরও মারা উচিত ছিলো।।। সবাই চলে যাওয়ার পর ছেলেটার
বাবা মা ওকে আবার জিজ্ঞেস করলো,, তুমি কেনো ওকে মেরেছো????
তখন ছেলেটা ওর বাবা মাকে বললো,, ও মেয়েটাকে ধাক্কা দিয়েছিলো তাই
ওকে মেরেছি।।। ছেলেটার কথা শুনে ওর বাবা মা অবাক হয়ে গেলো ভাবছে
এতটুকু ছেলে কি বলছে।।। তারা ছেলেটাকে বললো,, সামান্য ধাক্কা
দিয়েছিলো বলে তুমি ওর মাথা ফাটিয়ে দিবে??? তুমি জানো তুমি কত বড়
অপরাধ করেছো??? এখনই যদি এভাবে করো তাহলে বড় হয়ে তো তোমায়
নিয়ে আরও সমস্যা হবে।।। আর মেয়েটাকে কেউ কিছু বললেই কি তুমি
তাকে মারবে??? হ্যা মারবো।।। কেনো মারবে??? আমার মেয়েটাকে অনেক
ভালো লাগে ।।। ওর কষ্ট আমি সয্য করতে পারি না তাই।।। যেই ওকে কষ্ট
দিবে তাকেই আমি মারবো।।। ছেলেটার বাবা মা এই কথা শুনে অনেক অবাক
হয়ে গেলো আর সেই সাথে ভয়ও পেলো।।। কারন তারা ভবিষ্যতে কথা চিন্তা
করেছিলো।।। ছেলেটার বাবা মা অনেক বুঝালো ওকে এসব না করতে কিন্তু
ছেলেটা ছিলো অনেক জেদি।।। একবার যা ভাবে তাই করে।।। ছেলেটা কখনোই
মেয়েটাকে বলেনি এসব ওর জন্য করতো ও।।।। অনেক সময় তো ছেলেটা
দূর থেকেই মেয়েটার সাহায্য করতো।।।। ছেলেটার করা কাজগুলোকে মেয়েটা
উল্টা বুঝাতো।।। তাতে অবস্য ছেলেটার কোনো দুঃখ ছিলো না কারন ওর
কাছে মেয়েটার খুশিই ছিলো গুরুত্বপূর্ণ ।।। ওরা বড় হতে লাগলো আর
মেয়েটারও ছেলেটাকে ফালতু মনে করতে লাগলো।।।।
ছেলেটা মেয়েটার,,,,,,,, ছেলেটা মেয়েটার সাথে কথা বলতে চাইতো কিন্তু মেয়েটার ভালো লাগতো না।।
মেয়েটার চোখে ছেলেটা দিন দিন খারাপ হতে লাগলো।।। যখন ওরা ক্লাস
নাইনে পড়তো তখন থেকেই মেয়েটা ছেলেটাকে তেমন সয্য করতে পারতো না।।
মেয়েটা অনেক মেধাবী ছিলো কিন্তু চেলেটা তেমন লেখাপড়া করতো না।।।
ছেলেটা সবসময় মেয়েটাকে সাহায্য করতো আর মেয়েটা জানতেও পরতো
না।।। একদিন মেয়েটা স্কুল থেকে বাসায় আসছিলো।।। তখন কিছু বখাটে
মেয়েটার সাথে খারাপ ব্যবহার করলো।।। মেয়েটা কান্না করতে করতে
সেখান থেকে চলে গেলো।।। মেয়েটা বাসায় গিয়ে ওর বাবা মাকে বললো।।।
মেয়েটার বাবা ছেলেগুলোর বাবা মার কাছে বিচার দিতে যাবে তখন শুনে
ওদেরকে মেরে কেউ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে।।। পরেরদিন মেয়েটা স্কুলে
গেলো আর ছেলেটা ওর পিছু পিছু আসলো।।। মেয়েটা ছেলেটাকে অনেক
বলছিলো না আসতে কিন্তু ছেলেটা শুনলো না।।। এমনিতেই গতকাল মেয়েটার
সাথে ওই বখাটে গুলো খারাপ ব্যবহার করেছিলো যার কারনে মেয়েটার
অনেক রাগ ছিলো।।। আর ছেলেটা এভাবে মেয়েটার পিছু আসতেছে দেখে
মেয়েটার রাগ হলো অনেক ।।। যার ফলে ছেলেটাকে থাপ্পর মারলো কিন্তু
অআাক করার বিষয় হলো ছেলেটা কোনো রিয্যাক্টই করলো না।।। মনে হচ্ছিলো
যেনো কিছুই হয়নি।।। ছেলেটার বন্ধুরা ওকে বললো, ও তোর সাথে কথা বলতে
চায় না তারপরও তুই কেনো ওট সাথে কথা বলতে চাস??? তখন ছেলেটার ওর
বন্ধুদেরকে বললো, জানি না কেনো কথা বলতে চাই কিন্তু ওর সাথে
কথা বলতে না পারলে ভালো লাগে না।।। একদিন মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়লো।
রক্তের প্রযোজন ছিলো কিন্তু মেয়েটার সাথে কারও রক্তের গ্রুপ মিলছিলো
না।।। ছেলেটার ডাক্তারকে বললো, আমার মিল আছে আপনি আমার রক্ত নিন।
ডাক্তার ছেলেটাকে বললো, তুমি রক্ত দিতে পারবে না।। তোমার এখনও বয়স
হয়নি।।।।ছেলটা ডাক্তারকে কথা শুনছিলো না।।। অবশেষে ছেলেটা জেদের কাছে হার
মেনে বাধ্য হয়ে ডাক্তার রাজি হলো।।।। ছেলেটা ডাক্তারকে বললো, এসব
কাউকে না বলতে মেয়েটা, ওর বাবা মা কাউকে না।।।
মেঘা খব মনোযোগ দিয়ে গল্পটা শুনছিলো আর রবি হঠাৎ গল্পটা বলা বন্ধ
করলো আর মেঘাকে বললো,,
রবি ঃ আজকের মতো এখানেই শেষ।।।
মেঘার অনেক রাগ হলো কিন্তু রবিকে বলতেও পারছে না।।।
রবি ঃ আচ্ছা তুমি আবার আমাকে ভালোবেসে ফেললে না কি??? হা হা হা
অবশ্য তা হলে তো ভালোই হয়।।।।
মেঘা রবিকে বললো,,,
মেঘা ঃ কি বলছো উল্টা পাল্টা????
রবি ঃ ঠিকিই তো বললাম।।। যাইহোক তোমাকে একটা কথা বলতে চাই
অবশ্য আরও আগেই বলা উচিত চিলো।।। রোহান তোমাকে ভালোবাসে না।।
মেঘা ঃ চুপ আর একটাও কথা বলবে না ওর সম্পকে আর কখনো এসব
বলবে না।।। ও তোমার থেকে হাজার গুন ভালো।।।।
রবি কোনো কতা বলছে না শুধু হাসছে।।।।
কিছুদিন পর,,,
আর মাত্র একদিন আছে তারপর মেঘা মুক্ত হয়ে যাবে রবির কাছ থেকে।।।
মেঘা অনেক খুশি এটা ভেবে যে, রবি আর ওকে বিরক্ত করতে পারবে না।।।
বিকেলে রবি মেঘাকে লেকের পাড়ে আসতে বললো,, মেঘা আসার পর
রবি মেঘাকে বললো,,
রবি ঃ আজকে তোমাকে এতো খুশি লাগছে কেনো????
মেঘা ঃ কারন কালকের পর রবি নামক প্যাড়া আমার জীবন থেকে
চলে যাবে।।।।
রবি কিছু বলছে না শুধু হাসছে।।। মেঘা অআাক হয়ে গেলো কারন ও রবিকে
কিছু বললে ও সেটার রিয়্যাক্ট করার বদলে শুধু হাসে,, মেঘা রবিকে বললো,
মেঘা ঃ ওই এতো হাসে কেনো তুমি??? আমি কি হাসির কিছু বলেছি নাকি।।
রবি ঃ কেনো হাসি তা সময় হলে জানতে পারবে।।। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করতে
পারি???
মেঘা ঃ করো???
রবি ঃ এতদিনে আমার প্রতি তোমার কোনো অনুভুতি হয়নি???
মেঘা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো।।। ও বুঝতে পারছে না রবির আজকে কি
হলো।।। কেমন করে জানি কথা বলছে।।। অন্যদিন তো এ রকম থাকে না।।।
আজ হঠাৎ কি হলো।।।
মেঘা ঃ না তোমার প্রতি আমার কোনো অনুভুতি হয়নি তবে তোমাকে যতটা
খারাপ ভাবতাম ততটা খারাপ তুমি নও।।। চাইলে আমরা বন্ধু হয়ে সারাজীবন
থাকতে পারি।।।।
রবি ঃ কথাটা যদি ছোটবেলায় বলতে তাহলে হয়তো মেনে নিতাম কিন্তু এখন
আর সম্ভব না।।। হয় তুমি আমাকে ভালোবাসবে না হয় খারাপই ভাববে।।।
আচ্ছা তোমাকে কারো সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই।।।।
রবি,,,,,,,,,,,,,,রবি রিহিকে ডাক দিলো।।।।
রবি ঃ তাই যাকে দেখতে চেয়েছিলি এটাই সে।।। মেঘা।।।।।
রিহি মাঘাকে বললো,,
রিহি ঃ অনেক ইচ্ছে ছিলো তোমাকে দেখার কিন্তু ও রাজি হচ্ছিলো না।।।
হঠাৎ গতকাল কল দিয়ে বললো মেঘাকে দেখতে চাইলে চলে আয়।।।
মেঘা ভাবতেছে রবির হঠাৎ করে কি হলো।।। মেঘার ভালো লাগতেছিলো না তাই
সেখান থেকে চলে আসতে চাইলো।।। হঠাৎ রবি মেঘার হাত ধরলো।।। মেঘা
কিছুটা অবাক হয়ে গেলো কারণ রবি এর আগে এমনটা কখনো করেনি।।।
রবি ঃ কেনো চলে যাচ্ছো??? ভুলে যেও না ১০ দিন এখনও শেষ হয়নি।।।।
হঠাৎ রোহান চলে আসলো আর এসেই দেখতে পেলো রবি মেঘার হাত ধরে
আছে আর মেঘা কিছুই বলছে না।।।
রোহান ঃ ঢাকা থেকে আসার পর তোমাকে কল দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু তোমার
মোবাইল বন্ধ।।। তারপর তোমার ফ্রেন্ডকে কল দিলাম সে বললো তুমি লেকের
পাড়ে আছো আর এখানে এসে তো দেখতে পাচ্ছি তুমি ভালোই আছো।।। আর
তোমাকে আমার ভাই মনে করেছিলাম আর তুমি আমার সাথে এটা করলে।।।।
ভালোই।।।
মেঘা ঃ তুমি যা ভাবছো তেমনটা কিছুই না।।। ও ছোটবেলা থেকেই আমার
পরিচিত।।। আমি ওর সাথে কখনো কথা বলতে চাইতাম না।।। কিন্তু ও
আমাকে ব্লাকমেইল করছিলো।।। ও বলেছিলো, যদি আমি ওর সাথে কথা
না বলি তাহলে ও তোমার কাছে আমার ব্যাপারে খারাপ কিছু বলবে।।।।
রোহান ঃ তুমি একবার আমার জীবন বাচিয়েছিলে তাই কিছু বললাম না।।।
রবি কিছু বলতে যাবে তখনি মেঘা রবিকে থাপ্পড় দিলো।।।।
মেঘা ঃ আর একটা কথা বলবি না তুই।।। তোকে বন্ধু ভাবছিলাম কিন্তু তুই
সেটারও যোগ্য না।।।
মেঘা চলে যেতে লাগলো রোহানের হাত ধরে।।। আর রবি ওদের দিকে তাকিয়ে
ছিলো।।। রবির চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো।।। হঠাৎ রবির মুখ থেকে
রক্ত বের হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো ও।।। রিহি বলে রবি জোরে চিৎকার করলো।।
কিছুক্ষণ পর রবিকে হাসপাতালে নেওয়া হলো।।।। ডাক্তার বললো লাষ্ট ১ বছর
থেকে সে মাত্রাতিরিক্ত ড্রাগ নিচ্ছিলো।।। তার অবস্থা খুবই খারাপ।।। রিহি
বুঝতে পারলো কেনো রবির চোখ লাল দেখাচ্ছিলো।।।। ওইদিন মেঘা কোনো
কথা বলছে না শুধু রবির দিকে তাকিয়ে আছে।।। রবি এমন করবে ও কখনো
ভাবতো পারেনি।।। রবি মেঘাকে বললো,,,,,
রবি ঃ তোমাকে গল্পটা বলছি শোনো,,,
ছেলেটা রক্ত দিয়ে মেয়েটাকে বাঁচালো কিু মেয়েটা কখনো তা জানতে
পারলো না।।। ওরা যখন কলেজে উঠলো তখন মেয়েটা একটা ছেলের হাত
ধরে কথা বলছিলো।।। ছেলেটা এটা দেখে আর সয্য করতে পারলো না।।।।
মেয়েটার সামনেই ছেলেটাকে মারতে লাগলো।।। মেয়েটা অনেক নিষেধ
করেছিলো কিন্তু ছেলেটা শুনছিলো না।।। পরে মেয়েটা রেগে গিয়ে ছেলেটাকে
থাপ্পড় মারলো আর বললো,,,ও আমার বন্ধু ছিলো।। কেনো মরলি ওকে????
আমি তোকে ভালোবাসি না, তুই কেনো সেটা বুঝছিস না??? তারপর থেকে
মেয়েটা আর কখনই ছেলেটার সাথে কথা বলতো না।।। ছেলেটা কথা বলতে
আসলে মেয়োটা অপমান করতো আর মেয়োটার কারনে ছেলেটা অনেক
মারামারি করতো।।। মেয়েটাকে যারা বিরক্ত বা মেয়েটাকে যারা বাজে কথা
বলতো তাদের সবাইকে ছেলেটা মারতো কিন্তু মেয়েটা তা কখনোই জানতে
পারতো না।।। উল্টা মারামারির জন্য ছেলেটাকে আরও খারাপ ভাবতো।।।
রবি ঃ এখন হয়তো বুঝতে পারছো ছেলেটা আর মেয়েটা কে ছিলো।।।
ছোটবেলায় সেই ছেলেটা তোমার জন্য আর একটা ছেলের মাথা ফাটিয়ে
ছিলো,,, তোমাকে কিছু বখাটে বিরক্ত করেছিলো বলে ছেলেটা তাদের মেরে
হাসপাতালে পাঠিয়েছিলো।।। তোমাকে রক্ত দিয়ে বাচিয়েছিলো,, তোমাকে
কেউ বিরক্ত করলে তাদের মেরে তোমার কাছে খারাপ হতো।।। সবসময় ছায়ার
মতো পিছু থাকতো সেই খারাপ ছেলেটা সেটা আর কেউ না রবিই ছিলো আর
মেয়েছিলো মেঘা।।। যে কখনও রবির ভালোবাসা বুঝতো না।।। আর বুঝারও
চেষ্টাও করতো না।।। রবি কেনো এসব করছে তা না ভেবেই রবিকে খারাপ
ভাবতো।।।
মেঘার চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।।। রবি চোখের পানি মুছে মেঘাকে
বললো,,,
রবি ঃ আমি তোমাকে বলেছিলাম গল্পটা শেষ হলে তোমাকে কিছু প্রশ্ন
করবো।।। আমি শুধু তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে চাই।।।
তুমি কেনো আমাকে ভালোবাসো না।।।।??????
মেঘা কোনো কথা বলছে না শুু কাদতেছে।।। সবার চোখে পানি।।। রবি বললো,,,
রবি ঃ ঢাকাতে গিয়ে তোমাকে ভুলে থাকার অনেক চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু
পারিনি তাই ড্রাগ নিতাম যাতে তোমাকে ভুলে থাকতে পারি আর দেখো
এখন চর ড্রাগেরও প্রযোজন নেই তোমাকো সারাজীবনের জন্য ভুলে যাবো।।
মেঘা কাঁদতে কাঁদতে রবিকে বললো,,,
মেঘা ঃ আমাকে মাফ করে দাও আমি কখনো তোমাকে বুঝতে পারিনি।।।
তুমি চিন্তা করো না তোমার কিছু হবে না।।।।
রবি ঃ হা হা হা,,, আমি আগে থেকে জানতাম তাইতো তোমার কাছ থেকে
১০ দিন সময় চেয়েছিলাম যাতে এই ১০ দিন তোমার সাথে কাটাতে পারি।।।।
আর তুমি জিজ্ঞেস করতে না তুমি কিছু বললে আমি হাসতাম কেনো????
যখনই তোমার বলা কথায় কষ্ট পেতাম তখনই হাসতাম।।।।
মেঘা কাদতে কাদতে রবিকে জড়িয়ে ধরে বললো,,,
মেঘা ঃ আমি তোমাকে এতে অবহেলা করতাম তারপরও আমাকে কেনে
এতো ভালোবাসলে????।
রবি সবসময় যেটা বলতো সেটাই বললো,,
রবি ঃ জানি না।।। রোহান অনেক ভালো ছেলে ও তোমাকে ভালো রাখবে।।।
জানি না কখনে আমাকে মনে রাখবে কি না আমি চাইও না তুমি আমায় মনে
রাখো।।। তোমার কাছে আমার আরও একদিন সময় আছে।।। আমার একটা
শেষ ইচ্ছে রাখবা??? কালকে আমার কবরের উপর একটা গোলাপ রেখে
এসো।।।।
রবি আর কেনে কথা বলছে না।।। সবাই কাদতেছে।।। মেঘা যখন রবিকে
বুঝতে পারলো তখন আর ও পৃথিবীতে নেই।।। মেঘার চোখের পানি আর
কোনো মূল্য নেই।।।
১ দিন পর,,
মেঘা রবির কবরের কাছে দাড়িয়ে,,
মেঘা ঃ আমায় মাফ করে দিয়ো।।। আমি কখনই তোমাকে বুঝতে পারিনি।।।
তোমার কথা কখনো শুনিনি আর দেখো তোমার বলা শেষ কথাটা শুনতে
পারবো না।।। আমি কখনো তোমাকে ভুলতে পারবো না।।।।
মেঘা মনে করতে লাগলো রবি ওকে কতবার গোলাপ দিয়েছিলো আর ও সেটা
ফেলে দিয়েছিলো।।। আর এখন সেই গোলাপ দেওয়ার মানুষটাও আর নেই।।।
মেঘা চোখের পানি মুছে করবের উপর গোলাপটা রেখে আসলো।।।।।।।।।।।।।।।
সমাপ্ত.।।।।।।
গল্পটা কেমন হয়েছে অব্যশই কমেন্টে বলবেন এবং পরবর্তী গল্প পর্যন্ত
সাথে থাকুন।।।।।

bangla golpo,new golpo,bangla new golpo,বাংলা গল্প,বাংলা নতুন গল্প, অসমাপ্ত ভালোবাসা গল্প অসমাপ্ত ভালোবাসা status অসমাপ্ত ভালোবাসা অসমাপ্ত ভালোবাসা in english অসমাপ্ত ভালোবাসা বই অসমাপ্ত ভালোবাসা কবিতা

Post a Comment

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال