অবশেষে ভালোবাসা| bangla golpo
টিউশনি থেকে বাসায় ফিরছি।।। শরীরটা আজকে অনেক ক্লান্ত লাগছে।।।
জানি বাসায় ফিরলে সোনালীর বকা শুনে শরীরটার সাথে সাথে মনটাও
অনেকটা ক্লান্ত হয়ে যাবে।।। সব দিন গুলোর মতো আজকেও বাসার কলিং
বেল বাজিয়ে দাড়িয়ে আছি।।। জানি ভিতরে সোনালী আছে তবুও দরজা খুলে
দিবে না।।।।
সোনালী টিভি দেখছে।।। আমি আমার রুমের দিকে যাচ্ছিলাম আর তখনি
সোনালী বলতে শুরু করলো,,,,,,
সোনালী ঃ ঐ ফকিরের বাচ্ছা, ঐ দিকে কই যাসরে।।। জয়কে পড়াবে কে??
তোর বাপ এসে পড়াবে নাকি রে???? একটা মানুষের বসে বসে খেতে অনেক
মজা লাগে ফকিরের বাচ্ছা।।। ছোট লোক কোথাকার,, লজ্জা করে না, আমার
বাবার টাকায় খেতে পড়তে।।।
আমি কিছুই বললাম না।।। চুপচাপ রুমে চলে এলাম।।। গোসল করতে গিয়ে
অনেক সময় কান্না করলাম।।। এ কান্না নিরব কান্না।।। কেউ শোনে না, এমনকি
চোখের পানিও মিশে যায় সাধারন পানির সাথে।।। প্রতিদিন এটা আমার রটিন
হয়ে গেছে।।। আসুন পরিচিত হই,,,,
আমি সুজন,, বাবা মা কেই নেই এতিম।।। কাকার বাসায় থাকি।।। ইন্টার ২য়
বর্ষে পড়ি।।। টিউশনিও করি কিন্তু তাতে আমার খরচ চলে না।।। সোনালী
আমার কাকাতো বোন।।। আমি ওর দুচোখের কাটা।।। অনেক বকা দেয়
আমাকে।।। দেখলেনই তো।।। কাকা কাকি অনেক ভালো।।। তাই তো
থাকতে পারছি।।। জয় সোনালীর ছোট ভাই।।।
সোনালী আর আমি একসাথেই পড়ি।।। আসলে ওকে আমি কিছুই বলতে পারি
না কারন আমি সোনালীকে ভালোবাসি।।। আজও ভালোবাসি কথাটা বলা হয়
নি সোনালীকে।।।কি করেই বা বলবো,, যে আমাকে দেখতেই পারে না।।। যাই
খাওয়া দাওয়া করে জয়কে পড়াই।।।
আমি ঃ কাকিমা ভাত দাও।।।
কাকিমা ঃ হুম, বাবা তুই বস সোনালী দিচ্ছে।।। সোনালী মা সুজনকে ভাত
দে তো।।।
জানি সোনালী কাকিমাকে কিছুই বললো না, তবে আমার কপালে যে আজকে
আর ভাত জুটবে না সেটা খুব ভালো করেই বুঝলাম।।।
সোনালী ঃ ঐ ছোটলোকের বাচ্ছা, এখনো বসে আছিস কেন, আমি তোকে
ভাত দিবো ভেবে।।। কখনোই দিবো না।।।।
আমি কিছুই বললাম না।।। কারন কিছু বললে হয়তো একটা চর ও মারবে।।।
জয়কে পড়াচ্ছি কিন্তু খিদায় পেটটা জ্বলে যাচ্ছে।।। পড়ানোর শেষে রুমে যাচ্ছিলাম,,
সবাই তখন খাচ্ছিলো।।। কাকা ডাক দিলো,, অনেক খুশি হলাম।।। হয়তো খেতে
পারবো,, তা আর হলো কই।।।
কাকা ঃ খেয়েছিস সুজন???
আমি হ্যা বা না বলার আগেই কাকিমা বলে উঠলো,,,
কাকিমা ঃ সুজন খেয়েছে।।।
আর সোনালীও আমার দিকে রাগি ভাবে তাকালো।।। আমি কিছুই বলতে
না পেরে বললাম,,,
আমি ঃ আমি যাই ঘুমাবো, সকালে টিউশনি আছে।।।
আমি রুমে এসে শুয়ে ভাবতে লাগলাম, কাকিমা তো অন্যায় কিছু বলেনি।।।
তার মেয়ে খেতে দেয়নি তা তো আর দেখেনি।।। যাইহোক পেটে খিদা নিয়েই
ঘুমিয়ে পড়লাম।।। এমন তো অনেক রাত কাটাইছি।।। না হয় আজকেও
কাটাইলাম।।। তারপর আমি ঘুমিয়ে গেলাম।।। সকালে ঘুম ভাঙ্গলো।।।
যখনি টিউশনিতে যাবো বলে বের হবো কাকিমা পিছন থেকে বলে উঠলো,,,,
কাকিমা ঃ সুজন খেয়ে তারপর যা।।।
আমি কাকিমার কথা শুনে অবাক হলাম।।। এর আগে তো এত সকালে খেতে
বলেনি।।। কি ভাবছেন কাকিমা আমাকে দেখতে পারে না।।। আরে না।।।
কাকিমা এতো সকালে ওঠে না।।। ওনি আমাকে অনেক আদর করেন।।।
তাই তো থাকতে পারছি।।।
আমি ঃ হ্যা কাকিমা বলো???
কাকিমা ঃ খেয়ে তারপর টিউশনিতে যা,,, আমি টেবিলে খাবার দিচ্ছি।।।
আমি ঃ না আমি এখন ঠান্ডা ভাত খাবো না।।।
কাকিমা ঃ দিবো এক চড়।।। তোর জন্য রান্না করেছি।।।।[ রেগে বললেন]
আমি খেতে বসে দেখলাম সত্যি কাকিমা রান্না করেছে।।।।
আমি ঃ তুমি এত সকালে রান্না করতে গেলে কেন???
কাকিমা ঃ তুই কাল রাতে খাসনি কেন বলতো।।। সোনালীর বাবা জিগ্যাস
করলো তুই বললি খেয়েছি।।। না খেয়ে কেন মিথ্যা বললি??? তুই জানিস
সোনালী বদমেজাজি।।।।
আমি ঃ এমনি বলিনি।।।
কাকিমা ঃ হইছে।। এবার খাবার খেয়ে যা তো।।।।।
আমি নাস্তা করে টিউশনি করাতে করাতে নয়টা বেজে গেলো।।। আমি তারা
তারি করে বাসায় এসে রেডি হয়ে কলেজ যাবো বলে বের হলাম।।। রাস্তায়
দেখি সোনালী দাড়িয়ে আছে।।।। আমি কিছুই বললাম না।।। জানি কিছু বললে
বকা দিবে।।। আমি আস্তে আস্তে হাটতে লাগলাম।।। সোনালী হয়তো রিকশা
করে আসবে।।। আমার তো এতো টাকা নেই।।।
টিউশনি করিয়ে নিজের খরচ টা চালাই কোনো মতে।।। কিছুদুর যেতেই
সোনালী ডেকে উঠলো।।।।।
সোনালী ঃ এই সুজন দাড়া।।।
আমি সোনালীর ডাক শুনে ঘুরে দাড়ালাম।।। সোনালী এসে বললো চল।। আমি
সোনালীর দিকে হা করে তাকিয়ে রইলাম।।। সোনালী বলে উঠলো।।।।
সোনালী ঃ কি রে এমন করে তাকিয়ে আসিস কেন???
আমি ঃ না এমনি।।।
তারপর দুজনে হেটে কলেজ পৌছালাম।।। আজ খুব অবাক হলাম,,, সোনালী
হেটে আসলো কেন??? যতারীতি আমি কারো সাথে তেমন কথা বলি না।।।
চুপচাপ থাকি।।। সোনালী ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলো।।। আমি বকুল
গাছের নিচে বসে বই পড়ছিলাম ।।। হঠাৎ,,,
সোনালী ওর বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলো।।। আমি বকুল গাছের নিচে
বসে বই পড়ছিলাম।।। হঠাৎ একটা মেয়ে এসে বললো,,,,
আমি উপরে তাকিয়ে দেখি লিমা।।। মানে আমার ক্লাসমেন্ট।।।
আমি ঃ হুম বলো কি বলবা???
লিমা ঃ আসলে আমি একটা চ্যাপ্টার বুঝতে পারছি না।।। তুমি যদি বুজিয়ে
দিতে।।।
আমি ঃ ঠিক আছে।।। কোথায় প্রবলেম বলো।।।
লিমা আমার পাশে বসার সাথে সাথে সোনালী এসে বলল,,
সোনালী ঃ কি হচ্ছে এখানে???
আমি সোনালীর কথায় কি বলবো বুঝতে পারছি না।।। শুধু বললাম,,,
আমি ঃ ও আমার কাছপ নোট নিতে আসছে।।।
সোনালী ঃ লিমা তুই যা,,, নোট আমি দিবো।।। সুজনের ধারের কাছেও যেন
তোকে না দেখি।।।।
ঠাসসসসসসসসস।।।
আমি উঠে দাড়াতেই সোনালী আমাকে একটা থাপ্পর মারলো।।। আর বললো,,,,
সোনালী ঃ আমার বাবার টাকায় খেয়ে আবার প্রেম করতে চাস??? আমি
যদি বাবার কাছে না বলি তো আমার নাম সোনালী নয়।।।
বলেই সোনালী চলে গেলো।। আমার চোখ দিয়ে দুফোঁটা জল টপ করে
গরিয়ে পড়লো।।। সোনালীরে আমিও তোমাকে উল্টা থাপ্পর দিতে পাড়তাম।।।
শুধু পাড়ি না তোকে ভালোবাসি বলে।।। আর বাবাকে কথা দিয়েছিলাম, ,, যত
কষ্টই হোক আমি যেন কাকা কাকির কাছে থাকি।।।আমি কলেজ থেকে
ফিরলাম।।। গোসল করে যখনি খেতে যাবো, তখনি কাকিমা বললো,,,
কাকিমা ঃ সুজন দেখতো সোনালী রুমে কি করছে??? ওকে খেতে আসতে
বল।।।
আমি ঃ জ্বি কাকিমা।।।।
আমি সোনালীর রুমের সামনে দাড়িয়ে আছি।।। খুব ভয় হচ্ছে, যদি আবার
বকা দেয়।।। আমি আর না ভেবে দরজা ঠেলে ভিতরে ডুকলাম,,, আমাকে
দেখেই সোনালী রেগে উঠলো।।।।
সোনালী ঃ এই ফকিরের বাচ্ছা তুই আমার রুমে কেন????
আমি ঃ কাকিমা তোমাকে খেতে ডাকছে তাই আসছি।।।।
সোনালী ঃ ওহ এখন বাহানা, তাই না!!! আসলে তোর মতো লুচ্চা ছেলেকে
আমার ভালো করে চেনা আছে।।। যা বের হ বলছি।।।।
আমি কিছু না বলেই চলে আসলাম।।। এসে খাওয়া দাওয়া করে আবার
টিউশনিতে গেলাম।।।। রাতে বাসায় ফিরার পর কাকা বললো,,,
কাকা ঃ সুজন ফ্রেশ হয়ে আয়।।। তোর সাথে কথা আছে।।।।
আমি ফ্রেশ হয়ে এসে বসলাম। ।। কাকা বলতে শুরু করলো,,,
কাকা ঃ তোকে কলেজে পাঠাই কি প্রেম করতে।।।।
আমি ঃ কাকা তুমি এসব কি বলছো।।। আমি এসব কিচ্ছু করিনি।।।।
আমার কথাটা শোনা মাত্র কাকা আমাকে মারতে আসলো।।।। কাকিমা
সামলে দিলো।।। তারপর কাকা যা বললো,, আমি শুনে শুধু অবাক হলাম।।।।
কাকা ঃ তোর ফোন কোথায়????
আমি ঃ রুমে আছে কাকা।।।।
কাকা ঃ লিমা নামের মেয়েটা তোকে এত ফোন দেয় কেনো।।।। আর এসব
কিসব এসএমএস????
আমি ফোনটা হাতে নিবার আগেই কাকা ফোনটা আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে দিলো।।।
আর বললো,,,,
কাকা ঃএমন করলে আমার বাড়িতে একটুও জায়গা হবে না বলে দিলাম।।।।
বলেই কাকা চলে গেলো।।। আমি মাথা নিচু করে দাড়িয়ে রইলাম।।। একটু পর
সোনালী এসে বললো,,,
সোনালী ঃ ফকিন্নির বাচ্চার ঢং কত!!!
আমি কিছুই বললাম না।।। কি বলবো, আমার যে যাবার মতো কেউ নেই।।।।
আমি রাতে জয়কে পড়িয়ে ঘুমিয়ে গেলাম।।। প্রতিদিন আমার রটিন অনুযায়ি
চলতে থাকলো।।।। সোনালী ছেলেদের সাথে অনেক মিশে। ।। আমার অনেক
হিংসে হতো।।।। বাট কিছু বলতে পারতাম না ভয়ে।।।। আমি প্রতিদিন সোনালী
কে নিয়ে আমার ভালোবাসার কথাগুলো লিখে রাখতাম।।।। আর একটা মুচকি
হাসি দিতাম৷৷।।
মাঝে মাঝে ভাবতাম,, বেকার ভালোবাসি আমি৷।।।। সোনালী কোনদিন
আমার ভালোবাসা মেনে নিবে না।।।। তারপর আমি ঘুমিয়ে গেলাম ।।। আজ
শুক্রবার তাই নিজের কাপড় গুলো ধুয়ে নিলাম।।।।।
আমি শুয়ে আছি,,, এমন সময় সোনালী এসে বললো,,,
সোনালী ঃ সুজন একটা কাজ করে দে তো??? এখানে এক হাজার টাকা
আছে।।। মা তোকে বাজার করে নিয়ে আসতে বলছে।।।। তারাতারি নিয়ে
আসবি।।।।এই তার লিস্ট ।।। মা পিসিমনির বাসায় গেছেন।।। এসে রান্না
করবে কিন্তু ।।।।
আমি ঃ হুম ঠিক আছে ।।।
আমি টাকা নিয়ে যখনি একটা শার্ট বের করলাম।।৷ সোনালী বলে উঠলো,,,
সোনালী ঃ ছোট লোকের আবার শার্ট পড়তে হয়।।। আর টাকা চুরি করবি
না একদম।।।।
সোনালীর কথাগুলো শুনে অনেক খারাপ লাগলো।।।। তারপর আমি বাজার
করে নিয়ে আসলাম।।।। এসে বাজার দিয়ে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।।
একটু পর কাকিমা ডাকলো খাওয়ার জন্য।।।। খাওয়া দাওয়া করে যখনি
রুমে যাচ্ছিলাম,,, কাকা বলে উঠলো,,,,,,
কাকা ঃ সুজন এদিকে আয় তো,,,,
আমি সামনে গিয়ে দাড়াতেই কাকা আমার হাতে দুশত টাকা দিয়ে বললো,,
কাকা ঃ কোথাও থেকে ঘুরে আয়।।।। আজ তোর ছুটি।।।।
আমি টাকা নিতে চাইলাম না।।।। কিন্তু না নিয়েও কোন উপায় নেই।।।। আমি
রুমে বসে ভাবতে লাগলাম।।। আজ না হয় সোনালীকে প্রপোজ করে দেখি
কি হয়।।।। কিন্তু সোনালীকে,,,,,,,
কিন্তু সোনালীকে কোথায়ও ঘুরতে নিয়ে যাবো তা বলার সাহস আমার নেই।।।।
তাই কাকাকে গিয়ে বললাম,,,
সোনালী কথাটা শুনে আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে।।। আমি
কাকাকে বললাম,,,
আমি ঃ তুমি বলে দাও তাহলে সোনালী যাবে।।।
কাকা ঃ সোনালী মা যাতো সুজনের সাথে দুজন ঘুরে আয়।।।।
সোনালী কাকার কথা ফেলতে পারে না।।।। ভয় পায় বললেও চলে।।। সোনালী
রাজি হয়ে গেলো।।। আমি সোনালীকে নিয়ে একটা নদীর পাড়ে গেলাম।।।
সোনালী জায়গাটা দেখে অনেক খুশি।।। ও সেলফি তোলায় ব্যাস্ত।।। আমি
দাড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি।।। হঠাৎ সোনালী বলে উঠলো,,,
সোনালী ঃ সুজন আয় তোর একটা পিক ওঠাই।।
আমি না করলে ও বলে,,
সোনালী ঃ আসবি না মাইর খাবি।।।
কাশফুলের মাঝে দাড়িয়ে আমি একটা পিক উঠালাম।।। আমি আগেই লুকিয়ে
একটা গোলাপ নিয়ে এসে ছিলাম।।। আমি বুকে অনেক সাহস নিয়ে ঈশ্বরের
নাম নিয়ে সোনালীর সামনে দাড়ালাম।।।।
আমি ঃ সোনালী তোমাকে কিছু বলতে চাই।।।
সোনালী ঃ বল, কি বলবি!!!
আমি ঃ আমি তোমাকে,,,,,,,,,,,,,
সোনালী ঃ কি আমাকে,,,,,
আমি ঃ আ আ আমি তোমাকে,,,,,,
কথাগুলো বলতে গিয়েও পারছি না ।।। ভালোবাসি কথাটা বের হচ্ছে না।।।।
সোনালী ঃ কি বলবি বল তারা তারি বলছি!!!
খুব ভয় হচ্ছে সোনালী যদি মারে।।। আর কাকা কাকিকে বলে দেয়।।।। না
বলেই ফেলি,, আমি তোমাকে ভা,,,,, বলেই আটকে গেলাম।।।।
সোনালী ঃ কি বলতে চাস কি তুই???? তারাতারি বল না হলে এক থাপ্পর
দিয়ে কথাটা বের করে নিবো।।।।
আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না ।।। না বললেও সোনালী আমাকে ছাড়বে
না।।।। আমি বলে ফেললাম৷৷।
আমি ঃ আমি তোমাকে ফুচকা খাওয়াবো।।।। প্লিজ না করো না।।।
সোনালী ঃ তোকে একটা থাপ্পর না দিটো থাপ্পর দেওয়া দরকার।।।। এই কথা
বলতে এত সময় নিলি।।। চল।।।।
তারপর সোনালীকে নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে আসলাম।।।। সোনালী
ফুচকা খাচ্ছে আমি তাকিয়ে দেখছি।।। আমি আজও পারলাম না বলতে।।।
আমি সোনালীকে নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।।।। রাতে বসে বসে আমার
মনের কথাগুলো ডায়েরিতে লিখে রাখলাম।।। আজ সত্যি অনেক ভালো
লাগছে।।।।
সোনালী আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেনি।।। আমি বারান্দায় হাটতে বের
হলাম।।। আমি হঠাৎ দেখলাম সোনালী ফোনের দিকে তাকিয়ে আমার দিকে
আসছে।।।।আমি দাড়িয়ে গেলাম আর ভাবলাম এখন বলবো।।।। কিন্তু সোনালী
আমার পাশ কাটিয়ে চলে গেলো।।।। আমি কিছুই বলতে পারলাম না।।। আমি
নিচের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছি।।।।
সোনালী আমার সামনে এসে দাড়ালো,,, আর একটা থাপ্পর মারলো।।।।
ঠাসসসসসসসস
আমি আজ আর সহ্য করতে পারলাম না।।। আঘাত করলান ভালোবাসার
মানুষটাকে।।। আমি সোনালীকে একটা ঠাস করে থাপ্পড় মারলাম।।।।।
সোনালী আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।।।। হয়তো ভাবছে আমি
এত সাহস কোথা থেকে পেলাম।।। সোনালী আমাকে বলে উঠলো,,,,
সোনালী ঃ শয়তান, লুচ্চা তুই আমার ওড়না ধরে টান দিয়েছিস কেন???।
আমি সোনালীর কথা শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম।।।।সোনালীর ওড়না
টা সোপার সাথে আটকে আছে।।। আমি ওড়নাটা ছাড়িয়ে বললাম,,,
আমি ঃ আমি এতটাই নিচ না আর আমি লুচ্চা ছেলেও না।।। যে তোমার
ওড়না ধরে টানবো।।। দেখো তোমার ওড়নাটা আটকে ছিলো।।। মিথ্যে ভুল।
তুমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারো।।।।
কথাগুলো বলেই আমি চলে আসলাম।।৷ রাতে শুয়ে আছি জয় এসে বললো,,,
জয় ঃ দাদা খেতে আসো মা তোমাকে ডাকছে।।।।
আমি খেতে গেলাম।।। খাওয়া অবস্থায় দেখলাম সোনালী আজ চুপ কিছুই
বলছে না।।। আমি আর কথা বাড়ালাম না।।। খাওয়া দাওয়া করে এসে
ঘুমিয়ে গেলাম।।।। প্রতিদিন কার মতো আমার কাজ চলছিলো।।। সোনালীর
বকা আর আমার সয্য করা।।। আমি একদিন সোনালীকে একটা ছেলের
সাথে দেখে অবাক হলাম।।।।
ছেলেটা কে আমি তা জানি না।।।। আজ খুব হিংসেও হচ্ছে ।।। কি করবো।।।।
আমি যে অনেক ভালোবাসি সোনালীকে।।।। রাতে বাসায় ফিরলাম।।।।
কাকিমা খেতে ডাকলো কিন্তু আমি কিছুই বললাম না ।।। মনে শুধু একটা
প্রশ্নের উদয় হলো যে ছেলেটা কে।।।। আমি আর সয্য করতে পারলাম না।।।।
রাত দশটায় সোনালীর রুমে গেলাম।।। সোনালী তখন ফোনে এসএমএস
করায় ব্যাস্ত।।।।
আমি ঃ সোনালী তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।।।।
সোনালী আমার কথা শুনে বললো,,,
সোনালী ঃ কি কথা আর তুই এত রাতে এখানে কেন????
আমি ঃ আমি কিছু কথা বলতে চাই।।। তাই আসলাম।।।।
সোনালী ঃ কি কথা বল।।।।
আমি ঃ তোমার সাথে আজকে একটা ছেলেকে দেখলাম।।। ছেলেটা কে????
সোনালী ঃ কেনো??? সে কে তুই জেনে কি করবি????
আমি ঃ আমাকে বলো সে কে????
সোনালী ঃ বলবো না।।।।
আমি ঃ তুমি তাকে ভালোবাসো?????
সোনালী ঃ বাসলে বাসি তাতে তোর কি ছোটলোকের বাচ্চা!!!!
আমি ঃ সোনালী তুমি আমার বাবা মাকে বকা দাও কেন???? আমি শুধু
জিজ্ঞেস করেছি ছেলেটা কে।।।। তাতেই তুমি বকা দিবা????
সোনালী ঃ আমার রুমে,,,,,,,,,,,
আমি ঃ সোনালী তুমি আমার বাবা মাকে বকা দাও কেন???? আমি শুধু
জিজ্ঞেস করেছি ছেলেটা কে!!! তাতেই তুমি বকা দিবা????
হ বলছি।।।। আরেক দিন আমার রুমে দেখলে তোকে ঘাড় ঢাক্কা দিয়ে বের
করে দিবো।।। বের হ বলছি!!! না হলে আমি চিৎকার করবো বলছি।।।
আমি ঃ থাক সোনালী আমি চলে যাচ্ছি ।।।।
আমি এসে ঘুমিয়ে গেলাম ।।। সকালে উঠে আমি আমার কাজে চলে গেলাম।।।
রাতে আমি একটু শুয়েছিলাম।।।। তখন সোনালী বললো,,,,,
সোনালী ঃ কি রে ছোটলোকের বাচ্চা শুয়ে আছিস।।। জয়কে পড়াবে কে??
এ তোর লজ্জা করে না।।। তুই আমার বাবার টাকায় খাস।।।। আমি হলে কবে
বেড়িয়ে যেতাম।।।। তুই এখান থেকে যাস না কেন???? তোকে দেখলে আমার
গা জ্বলে।।। তুই চলে গেলে আমি খুব খুশি হবো তুই বাড়িতে একটা
আপত মাত্র ।।।।
আমি বিছানা থেকে উঠলাম না।।। আমি শুয়ে শুয়ে কান্না করছি।।। খুব কষ্ট
হচ্ছে।।।। আমার তো সব কিছু ছিলো।।। একটা ঝড় এসে সব ভেঙে গেছে।।।
পৃথিবীতে জায়গার অভাব নেই।।। আর আমি এ বাসায় থাকবো না।।। চলে
যাবো সোনালী।।।।। থাকবো না এ বাড়িতে ।।। তুমি তো আমাকে সয্য
করতে পারো না।।।
আমি চলে গেলে যদি খুশি হও তো আমি চলে যাবো।।। কাল সকালে কাকাকে
মিথ্যা কিছু বলে হলেও চলে যাবো।।। আমি আর সোনালীর চোখের কাটা
হয়ে থাকবো না।।।। তারপর আমি ঘুমিয়ে গেলাম।।।।
সকালে ঘুম ভাঙলো কারো কান্নার আওয়াজ শুনে ।।।। কে কান্না করছে
বুঝতে পরছি না।।।। একটু পরেই বুঝতে পারলাম কাকার রুমে কান্না
করছে।।।।আমি উঠে তারা তারি করে গিয়ে দেখলাম।।।। কাকা চোখ বন্ধ
করে পড়ে আছে আর কাকিমা, সোনালী কান্না করছে।।। আমি কিছুই বুঝতে
পারছি না।।।। আমি সোনালীকে বললাম,,,,
আমি ঃ সোনালী কি হয়েছে কাকার।।।। এমন কান্না করছো কেন????
সোনালী চুপ করে আছে আর কান্না করছে।।।।
আমি আবার বললাম,,,
আমি ঃ এ সোনালী কি হইছে বলবে তো????
সোনালী ঃ সুজন বাবা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেছে।।।। আর কথা বলছে না।।।
প্লিজ কিছু একটা কর????
আমি কি করবো বুঝতে পারছি না ।।।। আমি অনেক কষ্টে কাকাকে কোলে
তুলে নিলাম ।।।। তারপর গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।।।।
একটু পর ডক্টর এসে বলল,, ওনি হার্ট এটাক করেছেন।।। অনেক টাকা
লাগবে।।।। কাকিমা আমাকে কিছু টাকার কথা বললেন।।। আমি সোনালীকে
নিয়ে বাসা থেকে ঐ সব টাকা নিয়ে আসলাম।।৷ ।।।
আরো টাকা লাগবে তাই সোনালীসহ কাকিকে হাসপাতালে রেখে আমি টাকা
কালেক্ট করতে চলে আসলাম।।।। অনেক চেষ্টা করে কিছু টাকা নিয়ে
ফিরলাম।।। কাকিমা আমাকে দেখেই বললো,,,
কাকিমা ঃ সুজন টাকা পেলি????
আমি ঃ হ্যা কাকিমা।।।। কিছু টাকা পেয়েছি ।।।। তোমরা তো কিছু তো
খাওনি,,,, বসো আমি খাবার নিয়ে আসছি।।।।
বলেই আমি বাইরে গিয়ে খাবার নিয়ে আসলাম।।। খাবার এনে সোনালীর হাতে
দিয়ে বললাম নাও খেয়ে নাও।।।। সোনালী আমার মুখের দিকে তাকিয়ে
বললো,,,,
সোনালী ঃ আমি খাবো না।।।
আজ প্রথম সোনালীকে কান্না করতে দেখলাম।।।।
আমি ঃ কি সোনালী কান্না করছো কেন???।
বাবা বাবা বলেই সোনালী কান্না করে দিলো।।।।
আমি ঃ কি পাগলামি করছো।।। কাকা ঠিক ভালো হয়ে যাবে।।। নাও খেয়ে নাও।।।
কাকিমা কেও খাবার দিয়ে বসে রইলাম।।। একটু পর সোনালী এসে বললো,,,
সোনালী ঃ সুজন তুই খাবি না???
আমি ঃ না আমি খাবো না।।। আমি খেয়েছি।।।।
সোনালী আমার কথা শুনে আর কিছু বললো না।।। চুপ করে বসে রইলো।।।
একটু পর ডক্টর এসে বললো,,, কোনো ভয় নেই ওনি সুস্থ হয়ে যাবে।।।
কাকিমা কাকার কাছে রইলো।।। আমি আর সোনালী বসে আছি সাথে জয়ও।
একটু পর একটা লোক এসে বললো,,,
লোকটি ঃ আপনি বলছিলেন রক্ত দিবেন!!!! চলেন।।।।
সোনালী কথাটা শুনে বললো,,
সোনালী ঃ কিসের রক্ত দিবে ও!!!!
লোকটি ঃ আমাদেরকে রক্ত দিবে বলেছেন।।।।
সোনালী ঃ সুজন এসব কি বলছে লোকটা????
আমি ঃ আমি এ কে চিনি না সোনালী ।।।। এ ভাই আপনি যান তো।।।।
লোকটাকে ইশারা করে দিয়ে যেতে বললাম।।। আর সোনালীকে বললাম,
লোকটা ভুল করেছে।।। সোনালী শান্ত হয়ে গেলো।।। আসলে আমি টাকার
জন্য রক্ত বিক্রি করতে চাইছিলাম।।।
তিনদিন পর কাকাকে ছুটি দিলো।।। কাকাকে নিয়ে বাসায় আসলাম।।।
তারপর আমার কাজ গুলো আবার করতে লাগলাম।।। একদিন আমি
ওয়াস রুমে ছিলাম।।। সোনালী আমার রুমে আসলো।।।। আরে বলাই তো
হলো না সোনালী আজ কাল পরিবর্তন হয়ে গেছে।।। আজ কাল আর
বকা দেয় না।।।।
সোনালী আমার রুমে ডুকে টেবিলের উপর একটা ডাইরি দেখতে পেলো।।।
সোনালী কৌতুহল বশত পড়তে লাগলো।।।।
সোনালী ডাইরিটা পড়তে গিয়ে,,,,,,,,,
সোনালী আমার রুমে ডুকে টেবিলের উপর একটা ডাইরি দেখতে পেলো।।।
সোনালী কৌতুহল বশত পড়তে লাগলো।।।।
অত্যাচার গুলো লেখা।।। আর ভালোবাসি সোনালী তোকে খুব।।।। কিন্তু
বলতে পারি না।।।।
সোনালী আরো পড়তে লাগলো,, জানো সোনালী তোমাকে আজ নদীর পাড়ে
নিয়ে বলতে চাইছিলাম I IoveYou but পারলাম না।।।। বললাম ফুচকা
খাওয়াবো।।।। জানো না তো সোনালী সেদিন বিকেলে আমি তোমার ওড়না
টেনে ধরিনি।।। আমি তোমাকে অনেক ভালো বাসি।।।
সেদিন তোমাকে থাপ্পড় দিয়েছি।।।। কিন্তু জানো ব্যাথাটা আমার গায়ে
লেগেছে।।। সেদিন ঐ ছেলেটা কে তোমার সাথে দেখে খুব হিংসে হচ্ছিলো।।।
বাট আমি সেদিন হেরে গেলাম।।। কারন তুমি সেই ছেলেটাকে তো ভালোবাসো।
তুমি তারপর যখন বললে আমি চলে গেলে খুশি হবে,, সেদিন ঠিক করছিলাম
আমি চলে যাবো।।।
কিন্তু পরের দিন কাকা অসুস্থ হয়ে গেলো।।। আমি যেতে পারলাম না।।। আমি
কাকা কাকির মাঝে আমার বাবা মার ছাড়া দেখতে পাই।।। খুব ভালোবাসি
কাকা কাকিকে।।।। আমি সারাজীবন এ পরিবারে থাকতে চাই।।। কিন্তু
আমাকে একদিন চলে যেতে হবে।।। সোনালী আমাকে যতই অপমান করো
আমি আমার বাবা মাকে ছেড়ে কোথায় যাবো না।।।। আমি তোমাকে অনেক
ভালোবাসি।।।।
সোনালী ডাইরিটা পড়ে ডুকরে কেঁদে উঠলো ।।। তখনি আমি ওয়াশ রুম থেকে
বের হয়ে আসলাম।।। সোনালী আমার দিকে তাকিয়ে আছে।।।। আমি
সোনালীর হাতে ডাইরিটা দেখে ভয় পেয়ে গেলাম।।। আমি আস্তে আস্তে
সোনালীর সামনে আসতেই সোনালী যা বললো তা কোনোদিন কল্পনা ও
করিনি।।।।সোনালী বললো,,,,
সোনালী ঃ সুজন এতে কি সব লেখা,,, সব সত্যি????
আমি কিছু বলার আগেই সোনালী আমাকে জড়িয়ে ধরলো।।।। আর বললো,,
সোনালী ঃ i love u sujon..... কেনো এতো দিন বলিসনি।।। তুই আমাকে
এতোটা ভালোবাসিস।।।। i love u soooooo...... Much sujon......
সোনালী আমাকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরছে যেন মনে হচ্ছে আমি সোনালীকে
ছেড়ে চলে যাবো।।। আমি সোনালীকে জড়িয়ে ধরতে চেয়েও ভয় পাচ্ছি যদি
সোনালী মারে।।।।।
আমি আজ এতো খুশির মাঝেও কান্না করছি।।। ( কারন আজ আমার পরিক্ষা
ভালো হয় নি) আমি কখনো কল্পনাও করিনি সোনালী এভাবে নিজে থেকে
ভালোবাসি কথাটা বলবে।।।। আমি যেন জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়াটা পূরণ
করেছি।।।।।
সোনালী ঃ তুই আমাকে সত্যি ভালোবাসিস তো???? এই ডায়রির কথা
গুলো সত্যি তো সুজন?????
আমি চুপ করে মনে মনে হাসছি।।।।সোনালী আবার বললো,,,
সোনালী ঃ এই সুজন তুই চুপ করে আছিস কেন????
আমি ঃ হুম ডায়রিতে যা লেখা আছে সব ঠিক ছিলো।।।। তোমাকে ভালো
বাসতাম কিন্তু এখন আর বাসি না।।।। যত তারাতারি সম্ভব আমি তোমাদের
বাসা ছেড়ে চলে যাবো।।।।
মিথ্যা বললাম কারন সোনালী কি করে তাই দেখতে চাই।।।।
সোনালী ঃ সত্যি তুই আমাকে ভালোবাসিস না।।।। আমি তোকে অনেক
অবহেলা করছি,, অত্যাচার করেছি।।।। কিন্তু আজ তোকে অনেক ভালোও
বাসি।।।। বিশ্বাস কর সুজন প্লি,,,,জ।।।।।
আমি ঃ আমি তোমার যোগ্য না সোনালী ।।।। আমি এতিম, , ছোট লোকের
বাচ্চা,,, ফকিরের বাচ্ছা ।।।। আর আমার মতো ছেলে কখনো তোমাকে
ভালোবাসতে পারে না।।।।
কথাগুলো বলতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো তবুও বললাম।।।। তারপর আমি
টিউশনিতে চলে গেলাম।।।। অন্যদিকে সোনালী রুমে বসে আমার কথা গুলো
ভাবছে,,।।।।
সোনালী ঃ সুজন সত্যি বলছে, কেনো আমার ভালোবাসা মেনে নিবে।।। আমি
তো ওকে একটুও মেনে নেইনি বা বুঝারও চেষ্টা করিনি।।। আজ আমার
নিজেকে খুব অপরাধী ভাবছি।।। একটু অবহেলার জন্য আমরা আমাদের
ভালোবাসার মানুষকে হাড়িয়ে ফেলি।।।। আর ভুলটা যখন বুঝতে পারি তখন
আর সময় থাকে না পিছনে যাবার।।। ( তাই সময় থাকতে বোঝার চেষ্টা করুন)
সুজন রাতে বাসার সামনে এসে কলিংবেল বাজাতেই আমি দরজা খুলে দিলাম।
তখন সুজন বললো,,
আমি ঃ আজ তুমি ঘুমাওনি সোনালী???? কাকিমা কোথায়??? /
সোনালী ঃ মা ঘুমাচ্ছে।।। আমার ঘুম আসছিলো না তাই জেগে আছি।।।।
আমি কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম।।।। সোনালী আমার পিছন পিছন গিয়ে
বললো,,,
সোনালী ঃ সুজন আমাকে তুই ক্ষমা করে দে।।। আমি তোর সাথে খারাপ
ব্যবহার করেছি।।।। আমি তোকে অনেক ভালোবাসি সুজন।।।।
আমি ঃ সোনালী তোমার প্রতি আমার কোনো রাগ বা অভিযোগও নেই।।।
তুমি কখনো আমাকে ছোটলোক, ফকিরের বাচ্ছা ছাড়া কথা বলোনি।।যা
তা অপমান করছো।।। কি ভাবছো সব কিছু ভুলে গেছি আমি???? কিছুই
ভুলে যাইনি আমি।।। আমি এতিম।।।। এতিম হয়েই থাকতে চাই।।।। হুম আমি
তোমাকে ভালোবাসতাম এখন আর বাসি না।।। অনেকটা ঘৃনা করি তোমাকে।।।
সোনালী আমার কথাগুলো নিচের দিকে তাকিয়ে শুনছে আর কান্না করছে।।।
আজ সোনালীর মুখে কোনো কথা নেই।।। সোনালী যেনো বোবা হয়ে গেছে।।।
আমি সোনালীকে কথাগুলো বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম।।।। আমি রাস্তা
দিয়ে হাটছি আর মনে মনে বলছি,,,, সরি সোনালী আমাকে ক্ষমা করে দিও।।
তোমাকে আজও অনেক ভালোবাসি।।। তুমি আমাকে আজ ভালোবাসো এটা
আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া ছিলো কিন্তু আমি যে গরীব।।। জানি
আজ তুমি অনেক কষ্ট পাচ্ছো আমার কথাগুলো শুনে।।। বিশ্বাস করো
তোমাকে কষ্ট দিতে গিয়ে আমার তিনগুন বেশি কষ্ট হচ্ছে।।।। কি করবো বলো,,
কাকা যে তোমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছে।।। সামনের মাসেই তোমার বিয়ে
হবে।।। একটা সুখের সংসার হবে।।। কাকার সপ্ন পূরন হবে।।।। ডাঃ বলেছেন
কাকাকে উত্তেজিত করা যাবে না।।।। কি করে আমি এতো বড় সপ্নটা ভেঙে
দেই বলো।।।। i love u sonali but i am really sorry.......
আমি কথাগুলো মনে মনে বলতে বলতে,,,,
আমি কথাগুলো মনে মনে বলতে বলতে একটা দোকানে এসে পৌছালাম।।।
মামা এক প্যাকেট সিগারেট দেন তো।।।।
হচ্ছে।।। আমি সিগারেট নিয়ে ছাদে চলে গেলাম।।। একের পর এক সিগারেট
টানতে লাগলাম।।। কিছুই আর ভালো লাগছে না।।।। তারপর রুমে গিয়ে
ঘুমিয়ে গেলাম।।।
এভাবেই কয়েকদিন কেটে গেলো।।।। সোনালী আর আগের মতো আমাকে
বকা দেয় না।।। সারাক্ষণ আমাকে আগের অপমান করার কথা ভেবে কান্না
করে।।।।সোনালী ঠিক করলো আজ আমাকে আর একবার বোঝাবে।।।
আজও সোনালী আমার কথার কাছে হেরে গেলো।।।।
আমি ঃ দেখো সোনালী একটা কথা বলি তোমাকে।।। তোমার বিয়ে ঠিক
করে রেখেছে কাকা,, তাকেই বিয়ে করো সুখি হবে।।। আর যত তারাতারি
পারি তোমাদের বাসা ছেড়ে চলে যাবো কারন কাকা এখন পুরোপুরি সুস্থ
আছে।।।
সোনালী আমার মুখে বিয়ের কথা শুনে কিছুই বুঝতে পারলো না,,, ওর মাকে
বললো,,,,
সোনালী ঃ মস আমার নাকি বিয়ে ঠিক হয়ে আছে???? আমি তো কিছুই
জানি না???
কাকিমা ঃ হুম তোর বাবার বন্ধুর ছেলে মিঠুনের সাথে।।। সামনের মাসেই
তোদের বিয়ে হবে।।।।
সোনালী ঃ কি!!! কখনো না,,, আমি ঐ শয়তান মিঠুনকে বিয়ে করবো না।।।
বিয়ে যদি করতেই হয় সুজনকে করবো অন্য কাউকে না।।। তার আগে নিজেকে
শেষ করে দিবো।।। কথাটা মনে রেখো মা।।।।
সোনালীর মা খুব অবাক হলো।।। সে বুজতে পারলো এই কথাগুলো একবার
সোনালীর বাবার কানে পৌছালে উনি আবার অসুস্থ হয়ে যাবেন।।।।
রাতে আমি বাসায় ফিরলে কাকিমা আমাকে সবটা খুলে বললেন আর আমাকে
দূরে সরে যেতে বললেন।।। আমি কাকির কথা শুনে শুয়ে শুয়ে কান্না করছি
আর বলছি,,,,,
আমি ঃ কি দোষ করেছিলাম ভাগবান।।।। বাবা মাকে নিয়ে গেলে আর
আমাকে রেখে গেলে এতো গুলো কষ্ট পাবার জন্য???
আমি ঠিক করে নিলাম কিছু একটা বলে গ্রামে চলে যাবো।।।। কারন এমনি
তে কাকা যেতেই দিবে না।।। রাতে আমি ঘুমিয়ে গেলাম।।। সকালে আমার
ঘুম ভাঙলো সোনালীর ডাকে।।।।
সোনালী ঃ সুজন, এই সুজন ।।। উঠ এবার বাবা তোকে ডাকছে।।।।
আমি ঃ তুমি যাও আমি আসছি।।।।
সোনালী চলে যাবার পর আমি ফ্রেশ হয়ে কাকার রুমে গেলাম।।। কাকা
আমাকে দেখেই বলে উঠলো,,,
কাকা ঃ এত বেলা করে ঘুমানো ভালো না।।। তোকে কিছু টাকা দিচ্ছি বাজার
করে নিয়ে আয়।।। আজকে মিঠুনের বাবা মা আসবে।।। তারাতারি আসিস
কিন্তু।।।
কাকা আমার হাতে টাকা গুলো দিয়ে বললো।।।। আমি রুমে যেতেই সোনালী
আসলো।।।।
সোনালী ঃ সুজন তুই বাবাকে বল,,, তুই আমাকে ভালোবাসিস।।।। না হলে
আমি গিয়ে বলি????
আমি ঃ সোনালী তুমি কি পাগল!!!! জানো না তুমি কাকা অসুস্থ ।।।। তুমি
কি চাও বলগো???? আর কে বলেছে আমি তোমাকে ভালোবাসি।।। একটুও
তোমাকে ভালোবাসি না।।।। আর শোনো তুমি আমাকে করা অপমান ভুলতে
পারো কিন্তু আমি ভুলি নি।।। তোমাকে নিয়ে ডায়রিতে লিখতাম ঠিক আছে।।।
বাট তোমার করা অপমানে সব ভালোবাসা চলে গেছে।।।।তোমার জন্য আমার
ভালোবাসা নেই।।। যা আছে সব ঘৃণা ।।। তুমি আমাকে ভালোবাসলেও আমি
তোমাকে ভালোবাসি না।।।। যতটা ভালোবাসতাম তার চেয়ে বেশি ঘৃণা করি
এখন।।।।। তুমি কখনো ভালোবাসি কথাটা নিয়ে আমার কাছে আসবা না।।।।
আর কাকা তোমার বিয়ে ঠিক করেছে তাকেই বিয়ে করো।।।।। আর যদি
তোমার বাবাকে মৃত দেখতে চাও তাহলে যা খুশি করো।।।। তবে আমি
কাকাকে অনেক ভালোবাসি।।।। কোন দিন সে আমাকে ছোট লোকের বাচ্ছা
বা ফকিন্নির বাচ্চা বলেনি।।।।
সোনালী ঃ তুমি আমাকে ভালোবাসো না সুজন?????
আমি ঃ না।।।।।।।
সোনালী ঃ তাহলে ঐ ডায়রির লেখা গুলো মিথ্যা?????।
সোনালীর উপর আমার খুব রাগ হলো।।।। দিলাম ঠাসসসসস করে একটা
থাপ্পড়।।।।।
আমি ঃ আর একবার যদি বলো ঐ ডায়রির কথা তাহলে আমার চেয়ে খারাপ
আর কেউ হবে না।।।। এই সুজন এতো দিন সব সয্য করলেও এখন আর মানবো
না।।।। আমার চোখের সামনে থেকে তুমি যাও।।। আর কখনো এই এতিম ছোট
লোকের বাচ্চার কাছে আসবে না।।।।
সোনালী আমার কথা গুলো শুনে আজ শুধু কান্না করছে।।। আমি বাজারে
চলে গেলাম।।।। আমারও খুব কষ্ট হচ্ছে।।। আমি ঠিক করে নিলাম।।।। না
আমাকে এখান থেকে চলে যেতেই হবে।।।।
বিকেলে মিঠুনের বাবা মা সোনালীকে দেখতে আসলো।।। তারা বিয়ে ঠিক
করে গেলেন।।।। একমাস পর বিয়ে হবে।।।। সোনালী বসে বসে কান্না
করছিলো।।। আমি সকল আত্মীয়দের আপ্যায়ন করে যাচ্ছি,,, সোনালী মনে
মনে বলছে,,
সোনালী ঃ সুজন তুই এতটা পাশান হলি কি করে।।।। কত হাসি খুশি তুই সব
কাজ করে যাচ্ছিস।।।।
সব অতিথি চলে যাবার পর আমি শুয়ে পড়লাম ।।। রাতে সোনালী আমার
রুমে ঢুকে বললো,,,,
সোনালী ঃ সুজন বিশ্বাস কর আমি তোকে অনেক ভালোবাসি ।।।। আমি
তোকে ছাড়া বাচবো না।।।। প্লিজ সুজন।।।।
আমি ঃ সোনালী তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।।।। এসব তুমি কি বলছো।।।
আর এত রাতে কেন আমার রুমে আসছো।।।। বের হও সোনালী।।।।
সোনালী ঃ একদিন আমি তোকে অবহেলা করতাম আর আজ তোকে
ভালোবাসি।।। কিন্তু তা মেনে নিচ্ছিস না।।।। সুজন আমি নিজেকে শেষ
করে দিবো তবুও মিঠুনকে বিয়ে করবো না।।।। কথাটা মনে রাখিস।।।
সোনালী যা বলে তাই করে।।।।।
বলেই সোনালী,,,,,,,,,,,,,,,,
বলেই সোনালী চলে গেলো।।। আমি কি করবো সোনালী,,, আমিও যে
তোমাকে অনেক ভালোবাসি।।।। তবুও বার বার ফিরিয়ে দিচ্ছি ।।।। আমার
কাকিমা ঃ সুজন তোকে একটা কথা বলতে চাই????
আমি ঃ জ্বি,,, বলো।।।।
কাকিমা ঃ আমি তোকে মায়ের মতো আদর করি।।।। তুই এ মায়ের কথা
শুনবে তো!!!!!
আমি ঃ কাকিমা বলো কি কথা।।।।। আমি সব শুনবো।।।।
কাকিমা ঃ তুই আমার বাড়ী থেকে চলে যা।।। আর কখনো আসবি না।।।।
আমি সোনালীর সব কথা শুনেছি।।।। আমার মেয়েকে আমি সামলে নিবো।।
যত তারাতারি সম্ভব চলে যা।।।।। আর তোর কাকা যেন এসব না জানতে
পারে।।।।
কাকিমার কথা গুলো শুনে নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো।।।। তবুও বললাম
হুম।।।। আমি চলে যাবো।।।। তুমি নিশ্চিত থাকো।।।।
সে রাতে এলটুও ঘুমাতে পারলাম না।।।। সারা রাত চোখ দুটো ভিজে আসছে।।।
আমার কাজ গুলো নিয়ম মাফিক চলছিলো।।।। আর সোনালীর বিয়ের ডেটটা
ও এগিয়ে আছসে।।।কাকিমা আর আগের মতো নেই।।।। আমার সাথে তেমন
ভালো করে কথা বলে না।।।। সোনালীর বিয়ের ঠিক দশদিন আগে আমি
কাকার সামনে গিয়ে দাড়ালাম।।।। মিথ্যা একটা অযুহাত নিয়ে।।।।
আমি ঃ কাকা আমি কালকে গ্রামে চলে যাবো।।।।
কাকা আমার কথা শুনে অবাক চোখে তাকিয়ে বললো,,,,
কাকা ঃ গ্রামে চলে যাবি মানে????
আমি ঃ হ্যাঁ, ঐ খানের একটা স্কুলে আমার জব হয়েছে।।। পরশু জয়েন্ট
করতে হবে।।।। আর আমি ঐখানেই থাকবো।।।।
কাকা ঃ তোর জব হলো একবারও তো বললি না?????
আমি ঃ আসলে কাকা সারপ্রাইজ দিবো বলে বলিনি।।।।।
কাকা ঃ তা না হয় মানলাম বাট সোনালীর বিয়ে তুই চলে যাবি??? এটা কি
করে হয়।।।। আচ্ছা শোনো সুজন,,, বিয়ের ঠিক দুদিন আগে চলে আসবি
কেমন!!!!!
আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যা জবাব দিলাম ।।।। কখনো ভাবতে পারিনি।।।। কাকা
এত সহজে রাজি হয়ে যাবে।।। আমি রাতেই টিকিট কেটে নিয়ে আসলাম।।।।
সকাল সাতটায় বাস।।।। তাই তারাতাড়ি করে এসে সব গোছাতে লাগলাম।।।
তখনি সোনালী এসে বললো,,,
সোনালী ঃ মিথ্যে বাহানা দেখিয়ে চলে যাচ্ছিস তাই না!!!!
আমি কিছুই বললাম না চুপ করে রইলাম।।।। সোনালী আবারও বললো,,,
সোনালী ঃ ঠিক আছে যা মুক্তি দিলাম।।।। তবে বিয়ে আমি করবো না।।।।।
দরকার হলে মরে যাবো।।।।
আমি কিছু বলার আগেই সোনালী চলে গেলো।।।। আমি আবার কাপড়
গোছাতে মনোযোগ দিলাম ।।।। রাতে একবার ছাদে গেলাম।।।। এই ছাদে
যখনি আসতাম তখন সোনালী আমাকে বকা দিতো।।।। একটু বসে থেকে
চলে আসলাম।।।। সারা রাত সোনালী কান্না করলো।।।। ও জানে আমি
সত্যি চলে যাবো।।।।।
সকালে উঠে আমি সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে গেলাম।।।।
আমার আজ খুব কষ্ট হচ্ছে যাদের বাবা মা ভাবতাম তারাও পর হয়ে
গেলো।।।। আমি বাসে বসে বসে কান্না করছি।।।। আর ভিতরটা যেন ফেটে
যাচ্ছে।।।।।
ফোনটা বের করে,, লুকিয়ে তোলা সোনালীর পিক দেখছি আর চোখের জল
মুচতেছি।।।।হঠাৎ আমার ফোনটা বেজে উঠলো।।।। আমি দেখলাম কাকার
ফোন।।।। আমি রিসিভ করতেই ঐ পাশ থেকে কাকা বলতে লাগলো,,,
কাকা ঃ সুজন,,, তুই কোথায়????
আমি ঃ কাকা আমি বাসে বসে আছি।।।।
কাকা ঃ বাবা তুই তারাতাড়ি হাসপাতালে চলে আয়।।।।।
আমি ঃ কেনো কাকা কি হয়েছে?????
কাকা ঃ কথা না বাড়িয়ে তারাতারি আয় বলছি।।।।
আমার খুব ভয় হচ্ছিলো।।।। সোনালী কিছু করে বসলো না তো আবার।।।।
আমি বাস থেকো নেমে একটা সিএনজি করে তারাতাড়ি করে
হাসপাতালে গেলাম।।।।আমাকে দেখে কাকা এসে একটা ঠাসসসস করে
থাপ্পড় মারলো আর বললো,,,
কাকা ঃ আমার মেয়ে যদি মরে তোর খবর আছে।।।। খাইয়ে পরিয়ে
তোকে কাল সাপ পুসে ছিলাম।।।। আমার মেয়ে আজ মারা যাচ্ছে তোর
জন্য ।।।। আর মিথ্যে কথা বলে আজ চলে যাচ্ছিস!!!!!
আমি ঃ কাকা সোনালীর কি হয়েছে।।।।
কাকা ঃ চুপ ,,, একদম চুপ থাকবি????
কাকার কথা শুনে আমি চুপ হয়ে গেলাম।।।। একটু পর ডক্টর এসে বলল,,
ভয় নেই সোনালী সুস্থ হয়ে র্যাবে।।।। কাকিমা বললো,,,,
কাকিমা ঃ তুই চলে যাবার পর ও অনেক গুলো ঘুমের ঔষধ খেয়ে পড়ে
যায়।।।। পরে হাসপাতালে নিয়ে আসি।।।।
আমি সোনালীর কাছে যেতেই সোনালী অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলো।।।।
তখন আমি বললাম,,,
আমি ঃ এসব কি করলে তুমি সোনালী ।।। আজ যদি কিছু হয়ে যেতো।।।
সোনালী ঃ হলে হতো তাতে তোর কি!!!! এখন আসছিস কেনো???? তুই
একটা ছোট লোকের বাচ্চা, অসভ্য!!! আমার চোখের সামনে থেকে থেকে
দূর হ।।।।।
আমি সোনালীর কথা,,,,,,,,
আমি ঃ এসব কি করলে তুমি সোনালী ।।। আজ যদি কিছু হয়ে যেতো।।।
সোনালী ঃ হলে হতো তাতে তোর কি!!!! এখন আসছিস কেনো???? তুই
দূর হ।।।।।
আমি সোনালীর কথা শুনে মুচকি হাসছি।।। সোনালী কান্নার জন্য ঠিক করে
কথাও বলতেও পারছে না।।।।
আমি ঃ আচ্ছা ,,, মরার জন্য তো অনেক সিস্টেম ছিলো ।।।। ঘুমের ঔষধ
কেনো?????
সোনালী ঃ আমার ইচ্ছে তাই।।।। তুই কেন আচ্ছিস,,,, চলে যা বলছি!!!!
বলেই সোনালী আমাকে মারতে লাগলো।।।। আমি সোনালীকে জড়িয়ে
ধরে বললাম,,,,,,
আমি ঃ হবে এই ছোট লোকের বাচ্চার বউ!!!! কথা দিচ্ছি সুখে রাখবো।।।।।।
সোনালী ঃ না,, আমি তোর বউ হবো না।।।। এখনো তুই আমাকে
ভালোবাসিস কথাটাই বলিস নি।।।।।।
আমি ঃ সব কথা বলতে নেই।।।। কিছু কথা বুঝে নিতে হয় মেম????? আমি
তোমাকে অ,,,,নে,,,,,ক ভালোবাসি।।।।
সোনালী আমাকে জড়িয়ে ধরলো আর বললো,,,,,
সোনালী ঃ আমিও অ,,,,নে,,,,,ক ভালোবাসি তোমাকে।।।।।
আমি সোনালীর কানে কানে বললাম,,,,
আমি ঃআরেক বার মরার ইচ্ছে হবে আমাকে বলিও আমি একটা হারপিক
কিনে দিবো কেমন।।।
সোনালী শুনেই আমার দিকে রাগি ভাবে তাকালো।।।। আর আমি হাসতে
লাগলাম ।।।। একটু পর কাকা আর কাকিমা আসলো,,,,।।।এসে কাকা বলতে
লাগলো,,,,
কাকা ঃ সোনালীর মা৷,,, এই শয়তান দুটোর বিয়ে দিতে হবে।।।। আমি
মিঠুনের বাবাকে বুজিয়ে না করে আসি।।।।। আর আজ তুই রাতে সোনালীকে
নিয়ে বাসায় চলে যাস।।।।।
কাকা কাকি চলে যাবার পর সোনালী বলে উঠলো,,,,
সোনালী ঃ দেখলি কেমন মরার অভিনয় করে বিয়ে ঠিক করে দিলাম।।।।
তারপর কাকা মিঠুনের বাবাকে বুঝিয়ে আমাদের বিয়ে ফাইনাল হলো।।।।। কাল
আমাদের বিয়ে।।।।। [ সবার দাওয়াত রইলো।।।। সবাই চলে আসবেন কিন্তু]
আজ কেমন খুশি খুশি লাগছে।।।।
জীবনে ভাবতে পারিনি ।।।। সোনালীকে আমি পাবো,,, যথারীতি আমাদের
বিয়ে হয়ে গেলো।।।। আমি বাসর ঘরে ঢুকতেই সোনালী বলে উঠলো,,,
সোনালী ঃ৷ এত দেরি করলি কেন????
আমি ঃ এমন বউ জীবনে আর দেখিনি,,, বরকে তুই করে বলছে!!!!!
সোনালী ঃ বলবো একশ বার বলবো।।।। তোর কোনো সমস্যা।।।।।
আমি ঃ না গো কোনো সমস্যা নেই।।।।
সোনালী ঃ লেট করলি কেন?????
আমি ঃ আরে বন্ধুরা ছিলো তাই আরকি!!!!
বলেই আমি খাটে বসতে যাবো তখনি সোনালী বলে উঠলো,,,,
সোনালী ঃ এই বসবে না।।।। আমাকে আজকে প্রপোজ করতে হবে।।।। তাও
আবার হাতে গোলাপ নিয়ে।।।
আমি ঃ আচ্ছা মুসকিল ,,, এত রাতে গোলাপ কই পাবো।।।।
সোনালী ঃ তা তো আমি জানি না ।।।। আমাকে গোলাপ দিয়েই প্রপোজ
করতে হবে।।।।।
আমি ঃ প্লিজ লক্ষীটি,,, রাগ করো না।।।। অন্য দিক করি, কেমন!!!!!
সোনালী ঃ না,,, এখনি করতে হবে।।।। না হলে অন্য শাস্তি হবে।।।।।
আমি ঃ বলো দেখি কি শাস্তি?????
সোনালী ঃ আমাকে এখন কোলে করে ছাদে নিয়ে যেতে হবে।।।।
আমি ঃ okkkkk
বলেই আমি সোনালীকে কোলে নিয়ে ছাদে উঠলাম।।।। ছাদে গিয়ে আমি
খুব অবাক হলাম।।।। ছাদটা সুন্দর করে সাজানো,,, তাতে হাজারও গোলাপও
আছে।।।। সোনালী হঠাৎ বলে উঠলো,,,,,
সোনালী ঃ Happy birthday sujon....
আমি চমকে উঠলাম ।।।। আজ আমার জন্ম দিন ছিলো আর আমারি মনে
ছিলো না।।।। সোনালী আমার হাতে একটা কালারফুল মোড়ানো গিফট
বক্স দিলো।।।। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।।।।
সোনালী ইশারা দিলো খুলতে।।।। আমি খুলে আরো বেশি অবাক হলাম।।।।।
তাতে একটা গ্লোড বলের ভিতরে দুটো লাভার এক সাথে বসে আছে।।।।।
সোনালী বলে উঠলো,,,,
সোনালী ঃ থাকবে তো সারা জীবন আমার পাশে এভাবে।।।।
আমি পাশ থেকে একটা গোলাপ নিয়ে হাটু ভেঙে বসে বললাম,,,,
আমি ঃ হায় প্রেয়সি, আমি সারাজীবন শুধু তোমাকেই চাইবো।।।।।।।
I love you,,,,,...........
সোনালী চোখের জল মুছতে মুছতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।।।। আমি মনে
মনে বললাম,,, সারাজীবন তোমাকে এভাবেই বুকে জড়িয়ে রাখবো।।।।।
সমাপ্তি।।।।
[ গল্প পড়ে যারা কমেন্টে না করে চলে যান তাদেরকে বলছি,, তোমাদের
মতামতের উপর নির্ভর করে পরবর্তী পর্ব কতো বড় হবে বা কত তারাতারি
পরবর্তী পর্ব আসবে।।। তাই সবাই সবার মতামত কমেন্টে বলে যাবেন গল্পটা
কেমন হয়েছে।।।। আর আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী গল্প লেখতে
বসবো।।। আপনারা সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।।। ]
{{ভুলত্রুটি মার্জনীয় }}
bangla golpo,new golpo,bangla new golpo,বাংলা গল্প,বাংলা নতুন গল্প,
অসমাপ্ত ভালোবাসা গল্প
অসমাপ্ত ভালোবাসা status
অসমাপ্ত ভালোবাসা
অসমাপ্ত ভালোবাসা in english
অসমাপ্ত ভালোবাসা বই
অসমাপ্ত ভালোবাসা কবিতা
Tags
ছোট গল্প