অসমাপ্ত ভালোবাসা বাংলা গল্প | bangla golpo

 অসমাপ্ত ভালোবাসা বাংলা গল্প | bangla golpo


উর্মি কলেজের মেধাবী ছাত্রী, তার বাবাও অনেক টাকা। একে তো
ভালো ছাত্রী আরও বড়লোক বাবার একমাত্র মেয়ে। তাই একটু
অহংকারী টাইপের মেয়ে। আর এদিকে কলেজের আর একটা ছেলে
মিথুন নামের, উর্মিকে ভালোবাসতো।
গরীবের ছেলে বলে উর্মিকে কখনো তার ভালোবাসার কথা বলা হয় নি
কিন্তু উর্মি কলেজের একটা ছেলের সাথে প্রেম করতো, তবে ঐ ছেলেটার
চরিত্র ভালো না আর এই কথাটা উর্মির বান্ধবীরা অনেক বোঝানোর
পরেও উর্মি বুঝত না। আর মিথুন তো পাগলের মতো করে উর্মিকে
ভালোবাসত,
উর্মি জানতো এই কথা। কিন্তু মিথুন গরিব বলে পাত্তা দিত না, মিথুন
একদিন সাহস করে কলেজের বারান্দায় একটা ফুল নিয়ে দাড়ীয়ে
রইলো যে আজ যেভাবে হোক উর্মিকে তার মনের কথা জানাবে।
আর উর্মি কাছে আসতেই,,
মিথুন ঃ উর্মি তোমাকে একটা কথা বলার ছিলো।
উর্মি ঃবলো/
মিথুন ঃতোমাকে অনেক দিন আগে থেকেই ভালোবাসি। প্রথম দেখার পর
থেকেই কখন যে তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছি আমি জানি না,
আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
উর্মি ঃদেখো আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি আর তুমি আমাকে ভালোবেসে
দিতেই বা পারবে কি? থাকোতে বস্তির মাঝে আর ভসলোবাসো আমাকে ।
হা হা হা সত্যি খুব হাসি পাচ্ছে তোমার কথা শুনে।
মিথুন ঃ দেখো উর্মি জানি আমি গরীব কিন্তু গরীব বলে কি আমার
ভালোবাসার অধিকার নেই? আর তুমি আমাকে ভালো নাই বা বাসো
তবে তুমি যাকে ভালোবাসো সেই ছেলেটা ভালো না, তোমাকে কষ্ট দেবে
আর আমি চাই না কখনো তুমি কষ্ট পাও।
উর্মি ঃ আমার ব্যাপারে তোকে না ভাবলেও চলবে।
উর্মি আমার হাত থেকে ফুলটা নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল। এরপর থেকে
যখনি উর্মি আমাকে দেখতো তখনি অপমান করতো। সবার সামনে
অপমান করলেও আমি কিছু বলতাম না উল্টা বলতাম, তোমাকে খুব
ভালোবাসি তাই তুমি আমাকে যতই অপমান করো একটুও কষ্ট হয় না।
সবসময় উর্মির পিছে ঘুরতাম আর বলতাম,
মিথুন ঃ পৃথিবীতে আমার চেয়ে বেশি তোমাকে কেউ ভালোবাসতে পারবে
না। এটা আমি একদিন বুঝিয়ে দেবো তোমায়।
উর্মি ঃ যদি আমাকে এতোই ভালোবাসিস তাহলে আমার সামনে কখনোই
আসবি না তুই।
সেদিন উর্মির বয়ফ্রেন্ড আমাকে কলেজের মাঠে অনেন মেরেছে, আমি তার
কোনো প্রতিবাদ করিনি, কারন উর্মি কষ্ট পাবে বলে। পরে উর্মি তার বাবাকে
বলে আমাকে কলেজ থেকে বার করিয়ে দিয়েছে। তারপর আমি আর কখনো
উর্মির সামনে যাই নি।
কয়েক বছর কেটে গেলো। একদিন উর্মি অসুস্থ হয়ে পরলো। হসপিটালে
এডমিড হবার পর জানতে পারে যে উর্মির দুইটা কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে।
তার বাবার তো টাকায় অভাব নেই। সব জায়গাতেই খুজতাছে কিন্তু
কোথাও পেলো না। উর্মির তো হুস নেই। পরে আছে বিছানায়
এদিকে ডাক্তার বললো তারাতারি যদি কিডনি না দেয়া যায় তাহলে
উর্মিকে বাঁচানো যাবে না। অবশেসে কিডনি পাওয়া গেলো।
অপারেশন এর পর উর্মি সুস্থ হলো। উর্মির হুশ আসতেই চারদিকে দেখতে
লাগলো। তার মা বাবা সবাইকে দেখতে পেলো কিন্তু তার ভালোবাসার
মানুষটিকে না দেখে উর্মির বুক যেন কেঁপে উটলো। তার ভালোবাসার
মানুষটা তাকে বাচানোর জন্য কিডনি দিয়ে দিলো বলে। পাগলের মতো
হয়ে উর্মি উঠে উর্মি ডাক্তারকে বললো আমাকে কিডনি কে দিলো?
তখন ডাক্তার উর্মিকে নিয়ে গেলো সেই লাশের সামনে,। উর্মির শক্তি নেই
লাশের মুখের থেকে সাদা কাফনটা সরানোর। সাহস করে যখন কাফনটা
সরালো, উর্মি কান্নায় মাঠিতে লুটে পড়লো। কতা বলার শক্তি হারিয়ে
পেললো উর্মি। কারন এই লাশ তো মিথুনের। যাকে সে সারা জীবন তাকে
অপমান করেছে।
এরপর ডাক্তার উর্মিকে বললো আপনার ভালোবাসার মানুষটি আপনাকে
একটি বারের জন্যেও দেখতে আসেনি, আর মিথুনের দেয়া একটা চিঠি দিলো,
চিটিতে লেখা ছিলো,,,,,,
তুমিতো আমার মুখ কখনো দেখতে চাও নি। জানো তুমি না বলেছিলে সত্যি
তোমাকে ভালোবেসে থাকি তোমার সামনে যেন না আসি। দেখলে তো কতটুকু
ভালোবাসি তোমায়। একটা বারের জন্যেও তোমার সামনে আসি নি। জানো
তোমাকে নিয়ে অনেক সপ্ন দেখেছিলাম আর সেই তুমি তো কখনো আমার
বালোবাসা বুঝোনি।বলতে পারো, কি করবো এই জীবন দিয়ে যেই জীবনে তোমাকে পাব না।
আর তাইতো চির বিদায় নিলাম। আর কখনো তোমার সামনে এসে বলবো
না ভালোবাসি তোমায়। অনেক বেশি ভালোবাসি তোমায়। আমার একটা
শেষ ইচ্ছে পূরন করবে? একটি বারের জন্যে আমাকে বুকে জড়িয়ে
ধরবে।
চিঠি পড়া শেষ হতেই উর্মি মিথুনের লাশটা বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে
লাগলো আর বললো,,,,
মিথুন আমাকে ছেড়ে কেন গেলা।
অনেক রাত পার হয়ে গেলো, দুচোখের পাতা এক করতে
পারছি না। খুব টেনশন হচ্ছে ওর জন্য, সারা রাত আল্লাহকে
ডাকলাম, আল্লাহ তুমি ওকে সুস্থ করে দাও, ওকে পাওয়া
আমার শত জনমের ভাগ্য, ওর মতো করে আমাকে আর
কেউ ভালোবাসবে না।
ও আমার কাছ থেকে হাড়িয়ে গেলে আমি নিজেকে হাড়িয়ে
ফেলবো। প্লিজ আল্লাহ আমার সারা জীবনের ভালো কাজের
বিনিময়ে তুমি ওকে সুস্থ করে দাও।
ভোর বেলার দিকে চোখের পাতাগুলো ভারি হয়ে আসলো,
সকাল সাতটায় ঘুম থেকে উঠলাম, তারা তারি করে ফ্রেশ
হয়ে নিলাম। না খেয়েই হাসপাতালের দিকে রহনা দিলাম।
গিয়ে আবার সেই জানালার পাশে দাড়ালাম, কিন্তু ওকে দেখলাম
না। বেডটা খালি পড়েছিলো, বুকটা ধক ধক করে উঠলো, সারা
হাসপাতালে খুজলাম পাগলিটাকে, পেলাম না।।।
পরে এক ডাক্তারের কাছে জানতে পারলাম, আজ ভোর বেলা মিলি
আমাকে চির একা করে স্বার্থপরের মতো তার আসল ঠিকানায় চলে
গেছে। তার নাকি ক্যান্সার ছিলো।
সারাদিন কিভাবে ছিলাম আমার মনে নেই, পাগলের মতো
কেদেছি সারাদিন।আমার বুদ্ধির পর থেকে আমি যা চেয়েছি, তা
কখনো পাইনি। ভেবেছিলাম সবকিছুর বিনিময়ে আল্লাহ আমাকে
মিলিকে দিয়েছে, আমার আর কিছু চাই না।
কিন্তু আল্লাহ যে এভাবে আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে মিলিকেও কেড়ে
নেবে কখনোই ভাবিনি। তার মারা যাওয়াটা আমি মেনে নিতে পারি নি।
বিকেলে মিলির জানাযা হবে, জানাযায় গেলাম কিন্তু ওকে শেষ বারের মতো
দুচোখ ভরে দেখার সুযোগটাও আল্লাহ আমাকে করে দিলো না।
ওর কবরের তিন মুঠো মাঠি দিয়ে, সেই পরিচিত জায়গা দিঘির পাড়ে
গেলাম, এখানেই আমরা প্রতি শুক্রবার বসে গল্প করতাম, গত শুক্রবারও
আমরা এখানে বসে সময় কাটিয়েছি। বাদামের ফোসা গুলো এখনো
পড়ে আছে, প্রতিটি খোসাতে ছিলো মিলির হাতের স্পর্শ। খুব কান্না
পাচ্ছিলো আামার।
হাতে কয়েকটা বাদামের খোসা নিয়ে, মেসের পথে রহনা দিলাম। আজকে
কেনো জানি চেনা রাস্তাগুলোও অচেনা মনে হচ্ছে, কিছুক্ষণ হাটার পর
আর ধাপ ফেলতে পারছি না, খুব কষ্ট করে হেঁটে চলেছি।
হাটছি আর পাগলীটার স্মৃতি গুলো মনে করে কাঁদছি, বুকের বাম পাশে
অজানা এক তীব্র ব্যাথা, সন্ধ্যার পর মেসের ছাদে উঠে আকাশের দিকে
মুখ করে মৃত মানুষের মতো এলিয়ে দিলাম।।
চলে গেলাম ভাবনার জগতে, আজকের পর থেকে আর কেউ আমাকে
মাঝরাতে ফোন দিয়ে বলবে না, একটু আমার বাসার নিচে আসবে?
তোমাকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে। সারা রাত জেগে থাকলেও কেউ
বলবে না, তারা তারি ঘুমিয়ে পড়ো কিন্তু।
আর কেউ বলবে না, আমার কপালে একটা চুমু দিবে, কোনোদিন হয়তো
কারো মুখ থেকে শুনতে পারবো না, আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে।
শরীরের কোনো অঙ্গই যেন কাজ করছে না, হয়তো তারাও মিলির জন্য
শোকাহত।
কোথায় যেন শুনেচিলাম, মানুষ মরে গেলে নাকি আকাশের তারা হয়ে
যায়। মিটমিট চোখে আকাশের দিকে তাকালাম, দেখি আকাশে
তারার মেলা। আমি সেই লক্ষ কোটি তারার মাঝে আমার পাগলিটাকে
খুজতে থাকি। কিন্তু আপসোস এমন করে কে ভালোবাসবে আমায়।


bangla golpo,new golpo,bangla new golpo,বাংলা গল্প,বাংলা নতুন গল্প, অসমাপ্ত ভালোবাসা গল্প অসমাপ্ত ভালোবাসা status অসমাপ্ত ভালোবাসা অসমাপ্ত ভালোবাসা in english অসমাপ্ত ভালোবাসা বই অসমাপ্ত ভালোবাসা কবিতা

Post a Comment

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال