ডাইরির শেষ পাতা bangla golpo

 ডাইরির শেষ পাতা bangla golpo
ডাইরির শেষ পাতা bangla golpo
ছেলেঃকল দিবি না আর।
আমিঃ কি করলাম আমি?
ছেলেঃবলছি দিবি না, ব্যাস!
আমিঃঅপরাধ টা কি?
ছেলেঃঘ্যান ঘ্যান ভালো লাগে না, আজ থেকে যেন কোনো ম্যাসেস
বা ফোন না আসে।
আমিঃআমাকে কি অপরাধের শাস্তি দেয়া হলো?
ছেলেঃ ভালো লাগে না ব্যাস।
আমিঃ আমি এতোই খারাপ হয়ে গেলাম?
ছেলেঃতুই একটু না বহুত খারাপ, ভালো লাগেনা তোরে, আর ম্যাসেস
দিবি না ব্যাস।
এবার পরিচয়টা দিয়ে দেই। আমার নাম হচ্ছে জাকিয়া আক্তার
সুলতানা। আর যে ছেলেটি এতক্ষন আমাকে কথাগুলো বল্লো
তার নাম রাকিবুল ইসলাম রাকিব। অনেক পরিচয় দেয়া হলো
এরার গল্পের যাওয়া যাক,,,
মনে পরে যায় সেইদিন রাতের কথাগুলো। আমাদের শেষ ম্যাসেস
ছিলো। কি জানি কি অপরাধের শাস্তি দিয়ে গেলো। আমাদের উঠা বসা
চলা ফেরা কথা বার্তা সবই ভুলে গেছে হয়তো। রাগটা ওর বরাবরই বেশি।
ও রাগলে ওর মাথা ঠিক থাকে না।তাই আমিও বেশি কিছু বলি না।
আইডি অফ, ব্লোক করে রাখা, কথা না বলা এইগুলো ওর নিত্যদিনের
অভ্যাস আর আমার কাছে পানি ভাত। ওর সাথে পরিচয় কলেজ থেকে
আসার পথে। ধাক্কা লেগে হাত থেকে ব্যাগ পড়ে যায়। তারপর আর একদিন
কলেজে দেখা হয়। জানতে পারি সেই কলেজে পরে। সময় যেতে
থাকে চেনা জানা হতে থাকে তারপর ভালো লাগা আর ভালোলাগা
থেকে ভালোবাসার শুভ অধ্যায়ের সূচনা। অনেক ভালো বাসতো
আমায় সে। ওর কথা বলা, ওর ভয়েজ সব কিছুই মানান সই ছিলো।
সবই ঠিকঠাক। উদ্ভব ঘটে নতুন আর একজনের
যস আমার অগোচরে। আমি হয়তো বা কিছুই জানতাম না।
তখন সে তার ভালোবাসা বিলি করতে থাকে। পরে জানতে
পারি মেয়েটা আমার থেকে দুই বছরের জুনিয়র। একদিন আড়াল
থেকেও দেখেছি কলেজের পূর্ব দিকে থালা কাঠাল গাছের নিচে
দুজনে বসে গল্প করছে। ও জানতো আমি সেইদিন আসবো
না তাই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে নেয়। আশ্চর্যের বিষয় হলো
মেয়েটা আমার বিষয়ে জানতো, তবুও সে ইনভোলভ হয়। বড় অনাক
লাগে এটা ভেবে যে, মেয়েরাও মেয়েদের সর্বনাশ করতে পারে।
আমি বরাবরই চুপচাপ ছিলাম। কিছুই বলতে পারি নাই। না ও কে না
ঐ মেয়েকে। মেয়ের দোষ কি ও যদি নিজেই যায়। তাই চুপচাপ থাকতাম।
একা একা কাঁদতাম, কষ্ট হতো প্রচুর তবুও চুপচাপ থাকতাম। আমাদের
কথা বলা আস্তে আস্তে কমে যায়। কলেজে দেখলেও হাই হ্যালো
করতো। এর বেশি না, আমরা যে একটা সর্ম্পকে আছি ও সেটা ভুলেই
যেতো। ভালোবাসার শেষটা এরকম হবে জানলে ভালোবাসতে যেতাম না।
জীবন থেকে অনেক কিছুই পেয়েছি, তবে বেশি ভাগটাই ছিলো ধোকা,
ছলনা আর প্রতারণা। কিন্তু নিজে না কখনো কাউকে ধোকা দিয়েছি,
না ছলনা করেছি, না প্রতারণা করেছি। ভালোবাসার আচ্ছাদনে আবৃত
থেকে ভালোবেসে যেতেই শিখেছি। আমার মনে তার জন্য ক্ষোভ নেই,
আছে শুধু ভালোবাসা আর সম্মান। সেক্রিফাইজ জিনিসটা হয়তো আমার
জন্যই, তাই সেক্রিফাইজ করে যাচ্ছি এমন কি আজও করতে হচ্ছে।
একদিন অনেক রাগ উঠে যায়। ঝগড়া হয় প্রচুর। মুখ ফসকে ঐ
মেয়ের কথাও বলে ফেলিআর তার পর থেকেই আমাদের ঝগড়া বিবাদ,
এমনও দিন গেছে গালি
দিয়েছিলো আমায়। তবুও আমি চুপচাপ। সেইদিনের ম্যাসেজের পর
আর কথা হয়নি।স্ব ইচ্ছায় নিজের জায়গায় ছেড়ে দিয়ে চলে আসি।
ও চেয়েছিলো সেক্রিফাইজ করি, হ্যাঁ করেছি সেক্রিফাইজ। অনেকটাই
করেছি সেক্রিফাইজ। সেক্রিফাইজ জিনিসটা আমার সাথে জরিয়ে
আছে।দূরে এসে নিলুর সাথে ভালো আছি। নিলু আমার সন্তান।
অবশ্য আমার বল্লে ভুল হবে। আমাদের সন্তান বলা উচিত। আমাদের
দুজনের একটু বেশি ভালোবাসার ফসল হচ্ছে নিলু। ভালোবাসার
মাঝে এতোই ডুবে গিয়েছিলাম যে ঠিকভুল জ্ঞান হাড়িয়ে ফেলি।
বুঝতে পারিনি নিলু এসে যাবে৷ নিলুকে দুই মাসের পেটে নিয়েই চলে
আসি। ইনফ্যক্ট ও যখন ম্যাসেস দেয় তখন আমার হাতে প্রেগন্যান্সির
রিপোর্ট। ভেবেছিলাম নষ্ট করে দিবো। কিন্তু পরে ভাবলাম ওর তো দোষ
নেই। কিছু নাকাক্ষিত মুহূর্তের জন্য ওর জন্ম, ও তো ফুলের মতো
পবিত্র। একটা ছোট মাংসের দলা আমার মাঝে ধারন হয়েছে যা আজকের
নিলু। তাই চেয়েও সেইদিন নষ্ট করতে পারিনি। এখন নিলুর বয়স ছয়মাস।
জানি না সে কেমন আছে। কি করছে, রেবেকাকে নিয়েই আছে হয়তো।
রেবেকা সেই নারি যাকে দোষ দিবো না ভুল বুঝবো আমি নিজেই বুঝি না।
বিনা বিয়েতে প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়া এই সমাজে অত্যন্ত অশালীন। অনেকের
কাছে নিলু পাপের ফসল, কিন্তু আমার কাছে আমার সন্তান পবিত্র।
তাই চলে এসেছি অনেক দূরে। যেখানে আমি আর নিলু। সার্ভাইভ করতে
অনেক কষ্ট হয়েছিলো তবুও ধৈয্য ধরেছিলাম। তারপর নিলু আসে।
আর এখন নিলুকে নিয়েই বসবাস আমার। ও হয়তো খুজে না আমায়।
আমার নামের পাশে সবুজ বাতিটা আর হয়তো ওকে প্যারা দেয় না। আমার
আইডিটা হয়তো এখনো ওর ব্লোক লিষ্টে। কিন্তু আপসোস আইডিটাও এখন
আর নেই।আজ নিলুর স্কুলের প্রথম দিন। মেয়ে তার বাপের মতো
হয়েছে। এক রোখা স্বভাবের। যা বলে তাই করে, বাপের মতোই সুন্দর
হয়েছে। দেখতে দেখতে পাঁচটা বছর পার করে দিলাম নিলুকে
বুকে নিয়ে।স্কুলেও ভর্তি করিয়ে দিয়েছি। মাম্মাম ছাড়া কিছুই বুঝে না।
তবে হুটহাট করে তার বাবাইকেও লাগে তাই প্রশ্ন করে, মাম্মাম আমার
বাবাই কই। আবার প্রশ্ন গুলো এমনও হয় মাম্মাম সবার বাবাই আছে
আমার বাবাই কই। তখন আমার উত্তর গুলো হয়, মাম্মাম পাখি তোমার
বাবাই বিদেশে, যখন আসবে তখন দেখবে। বাবাইয়ের নাম করে মিথ্যে
মিথ্যে ড্রেস কিনে দেয়া খেলনা কিনে দেয়া আমার দুদিন পর পর এর কাজ।
নিলুও খুশি থাকে আর ওর প্রশ্নগুলোও দমে থাকে। তবে নিলুকে
দেখলে ওর কথা মনে পরে। অবিকল ওর মতো হয়োছে। গাল গুলো
ফুলা ফুলা, জোর ভ্রু, চিকন ঠোঁট, বাকা হাসি সব কিছুই তার বাবারই।
এজন্যই তার বাবাইয়ের প্রতি টান বেশি। সময়ের অন্তরালে লুকিয়ে
থাকা বুক ফাটা কান্না হয়তো কেউ দেখে না, অথবা দেখলেও বোঝে
না। ভালোবাসা যার যার কাছে যার যার মতো।কিছু জিনিস হয়তো
মেল বন্ধন হয় না। আবার সব সম্পর্কের যে মেলবন্ধন ঘটে তা ভেবে
নেওয়াটাও বোকামি। জীবন আবার খেলা
করছে আমায় নিয়ে।


keyward
bangla golpo,new golpo,bangla new golpo,বাংলা গল্প,বাংলা নতুন গল্প,

Post a Comment

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال